এসইও কি SEO এসইও বাংলা টিউটোরিয়াল পর্ব-১

এসইও কি SEO এসইও বাংলা টিউটোরিয়াল পর্ব-১

আপনি যদি এসইও (SEO) এর জগতে নতুন হয়ে থাকেন বা মোটামুটি ধারনা থাকে এবং এসইও সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য।

আমরা আপনাদের জন্য এসইও কি? কিভাবে এসইও করতে হয়? এই সকল প্রশ্নের উত্তর সহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে একটা সিরিজ বানিয়েছি, যেটার নাম দিয়েছি “এসইও শিখুন”। এই ধারাবাহিক পোস্টে আমরা এসইও সম্পর্কিত বিস্তারিত টিউটোরিয়াল দিবো।

এসইও কি

এসইও কি

এসইও কি

এসইও (SEO) এর অর্থ হলো Search Engine Optimization – সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এসইও বা Search Engine Optimization হলো কোনো ওয়েবসাইটকে বা ওয়েবসাইটের কোনো পেইজকে সার্চ ইঞ্জিনে (Search Engine) র‍্যাঙ্ক করানোর কলা-কৌশল।

এটি একধনের মার্কেটিং কৌশল, হতে পারে সেটা কোনো সার্ভিস বা প্রোডাক্টের মার্কেটিং অথবা কন্টেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি। এরপরেও যদি আপনার বুঝতে সমস্যা হয় যে, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন কি? তাহলে চলুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে এসইও কাকে বলে সেটা জেনে নেওয়া যাক।

আগে বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্তমানেও প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং অফলাইনে অর্থাৎ লিফলেট, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ইত্যাদি ব্যবহার করে করা হয়। কিন্তু ধীরে আমাদের চারিপাশের সবকিছু ডিজিটাল হচ্ছে, তেমনি অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায় অনলাইনে নিয়ে আসছে, এখানেই চলে আসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপার।

ডিজিটাল মার্কেটিং হলো অনলাইনে বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোনোকিছুর মার্কেটিং করা। আর এসইও হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা অংশ মাত্র।

আরো পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন শিখবো 

ধরুন, আপনি একটি স্মার্টফোন কিনতে চান। গুগলে গিয়ে সার্চ করলেন “২০০০০ টাকার মধ্যে ভালো গেমিং ফোন” তাহলে দেখবেন গুগল আপনাকে অসংখ্য ওয়েবসাইটের সন্ধান দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখানে ওয়েবসাইট গুলো একটার পরে আরেকটা সিরিয়ালি অবস্থিত।

কয়েক হাজার ওয়েবসাইটের সন্ধান পাবেন, কিন্তু সবগুলো ওয়েবসাইট কি সার্চ রেজাল্টের প্রথম প্রথম পেইজে দেখতে পাচ্ছেন? অবশ্যই না।

এখানে প্রথমে যে ওয়েবসাইটটা দেখতে পাচ্ছেন সেই ওয়েবসাইটটা আপনার সার্চ করা কিওয়ার্ডের জন্য ভালোভাবে এসইও অপ্টিমাইজ করানো। নির্দিষ্ট এক বা একাধিক কিওয়ার্ডের জন্য কোনো একটা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজকে সার্চ রেজাল্টে সবার উপরে বা প্রথমে দেখানোর সে প্রতিযোগিতা সেটাই হলো মূলত এসইও (SEO)।

এসইও এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

এসইও এর সঙ্গার মধ্যেই এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা লুকিয়ে আছে। যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটকে মানুষের কাছে পরিচিত করানো, সাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি করা ও লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এর গুরুত্ব অপরিসীম।

আপনার যদি একটা ব্লগ সাইট বা ই-কমার্স সাইট অথবা অন্য যেকোনো ওয়েবসাইটই থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই চাইবেন যে প্রতিনিয়ত আপনার ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ট্রাফিক আসুক, কেউ কোনো নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে যেন আপনার ওয়েবসাইটটা সবার আগে সার্চ রেজাল্টে দেখতে পায়।

আর এই কাজটা করার জন্য ওয়েবসাইটের এসইও এর কোনো বিকল্প নেই। সারা পৃথিবীজুড়ে এসইও-এক্সপার্টদের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ অনলাইনে অনেক বড় বড় কোম্পানি, স্টার্টআপ গড়ে উঠতে শুরু করেছে।

এছাড়াও অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্লগিংকে বাড়তি অর্থ উপার্জনের উপায় ও মূল পেশা হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছে।

আর তাদের ওয়েবসাইটকে গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য প্রয়োজন এসইও এক্সপার্ট। তাই কেউ যদি পেশাগত ভাবে এসইও এর কাজ করেন তাহলে সেটা একটা সম্ভাবনাময় পেশা হবে।

এসইও কি seo কি? কীভাবে এসইও করতে হয় এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন কী? সার্চ ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে এটা সম্পর্কেও আপনাকে জানতে হবে ।

সার্চ ইঞ্জিন কি

সার্চ ইঞ্জিন কি

সার্চ ইঞ্জিন কি

অনেকেই প্রশ্ন করেন সার্চ ইঞ্জিন কি সার্চ ইঞ্জিন হলো এমন একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যেটা আপনার দেওয়া নির্দিষ্ট কোনো কিওয়ার্ডের ভিত্তিতে গোটা ইন্টারনেট জগৎ থেকে তথ্য খুঁজে আপনার সামনে হাজীর করে। এটাকে একটা বিশাল তথ্য-লাইব্রেরির কর্মচারীর সাথে তুলনা করা যেতে পারে।

আপনি যখন কোনো লাইব্রেরিতে গিয়ে নির্দিষ্ট কোনো বই খুঁজেন তখন সেই লাইব্রেরিতে থাকা কর্মচারী বা কর্মকর্তা জানেন যে বইটা লাইব্রেরিতে আছে কিনা আর থাকলেও সেটা কোথায় আছে। বইটা লাইব্রেরিতে থাকলে সে সেটা খুঁজে এনে আপনার সামনে হাজীর করে। কোনো একটা সার্চ ইঞ্জিনও ঠিক এই কাজটি করে থাকে।

যখন নতুন কোনো একটা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজ খোলা হয় তখন সেটা ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকে ঠিকই কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা কোনো সার্চ ইঞ্জিনের ডেটাবেজে তালিকাভুক্ত করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সার্চ ইঞ্জিনে সেই ওয়েবসাইটের নাম বা সম্পর্কিত কোনো কিওয়ার্ড লিখলে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

আপনি যদি চান যে, কেউ আপনার ওয়েবসাইটের নাম বা কোনো কিওয়ার্ড লিখে সেখানে সার্চ করে খুঁজে পাক থাকে আপনাকে অবশ্যই সেই সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার ওয়েবসাইটকে সাবমিট করতে হবে। আর সার্চ ইঞ্জিন যখন ওয়েবসাইটের যাবতীয় পাবলিক ডেটা ডেটাবেজে তালিকাভুলক্ত করবে তখন এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ক্রলিং (Crawling)

সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

উপরের আলোচনা থেকে আশা করি এই প্রশ্নের উত্তরের কিছুটা আঁচ পেয়েছেন। সার্চ-ইঞ্জিনের কাজ করার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেয়। সার্চ-ইঞ্জিনগুলো মূলত ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।

যখন কোনো একটা ওয়েবসাইটকে সার্চ-ইঞ্জিনের কাছে ক্রলিং এর জন্য রিকোয়েস্ট পাঠানো হয় তখন সার্চ-ইঞ্জিন বটগুলো ঐ ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় সকল ডেটা সংগ্রহ করতে থাকে, যত বেশি সম্ভব ডেটা সংগ্রহ করা যায় তারা সেটাই করে।

এরপর ঐ ওয়েবসাইটে যখন নতুন কোনো তথ্য যুক্ত করা হয় তখনও বটগুলো ওই ওয়েবসাইটে যায় এবং নতুন ডেটা সংগ্রহ করে। এছাড়াও পুরনো কোনো ডেটা নতুনভাবে আপডেট করা হলে সেটাও কালেক্ট করে।

এভাবে প্রতিনিয়ত সার্চ-ইঞ্জিন বট বা রোবটগুলো লক্ষ লক্ষ্য ওয়েবসাইটে ঢুঁ মেরে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের তথ্য ভান্ডারে জমা করতে থাকে। আর যখন কেউ কোনো বিষয়ে তথ্য খোঁজে বা সার্চ করে তখন সেই তথ্যভান্ডার বা ডেটাবেজ থেকে তথ্য দেখায়।

আরো পড়ুন : জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম

এসইও কত প্রকার ও কি কি?

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এসইওকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। অনেকে বলেন, এসইও হলো দুই প্রকার। যথাঃ অন-পেজ এসইও এবং অফ-পেজ এসইও। আবার কেউ কেউ বলেন এসইও দুই প্রকার আর তা হলো অর্গানিক এসইও এবং পেইড এসইও।

কিন্তু যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, এসইও কত প্রকার ও কি কি? আমি তার উত্তরে বলবো, এসইও হলো প্রধানত ৩ প্রকার। নিচের অংশে আমরা এসইও এর সঠিক প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করবো।

এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন প্রধানত তিন প্রকার

১. হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO)
২. ব্ল্যাক হ্যাট এসইও (Black Hat SEO)
৩. গ্রে হ্যাট এসইও (Grey Hat SEO)

হোয়াইট হ্যাট এসইও কি? (What is White Hat SEO?)

হোয়াইট হ্যাট এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিনের নির্দেশনা মেনে সঠিক পদ্ধতিতে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করানো। এটাকে মূলত নৈতিক (Ethical) সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলা হয়।

হোয়াইট হ্যাট SEO এর কিছু টার্ম রয়েছে, যেগুলোকে নির্দেশনা বলা হচ্ছে। সেগুলো হলো – আর্টিকেল বা কন্টেন্ট উপকারী হতে হবে, যথেষ্ট পরিমাণে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে, ওয়েবসাটের ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক থাকতে হবে, কিওয়ার্ড স্টাফিং করা যাবে না ইত্যাদি।

হোয়াইট হ্যাট সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনকে আবার ৩ প্রকার

যেমনঃ

১. অন পেজ এসইও (on-page SEO)
২. অফ পেজ এসইও (off-page SEO)
৩. টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)

এবার চলুন এই তিন প্রকার এসইও নিয়ে সংক্ষিপ্তাকারে ধারণা নিয়ে নেয়। পরবর্তী আর্টিকেলে আমরা এই তিন প্রকার এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

অন পেজ এসইও

অন পেজ SEO হলো সাইটের ভেতরে নানারকম কৌশল প্রয়োগ করে ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করানোর পদ্ধতি। এটা ইথিকাল অপ্টিমাইজেশনের অন্যতম গুরুত্বপুর্ন অংশ। একটা আর্টিকেলকে সুন্দর করে সাজিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ কিওয়ার্ড প্লেস করে, ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী করে, সুন্দর ও গোছানো মেটা ডেস্ক্রিপশন লিখতে হয়।

আকর্শনীয় টাইটেল সহ কিছু অন পেইজ এসইও টেকনিক মাথায় রেখে কোনো পেইজ বা আর্টিকেল গুগলে র‍্যাঙ্ক করানো হলে থাকে on-page SEO বলা হয়।

এই অংশে আমরা বিশদ আলোচনা করছি না, অন্যথায় আর্টিকেলটা অনেক বড় হয়ে যাবে এতে করে অনেকেই বিরক্ত হতে পারে। অন পেজ এসইও কী, অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয়, অন পেজ এসইও টেকনিক ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে আমরা পরবর্তী পর্বে কথা বলবো। সেই পর্বটা পড়ার অনুরোধ করছি।

অন পেজ এসইও কি On Page SEO বাংলা টিউটোরিয়াল পর্ব-২

অফ পেজ এসইও

অফ পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের বাইরে গিয়ে সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু অফ পেজ এসইও টেকনিক ফলো করতে হবে। সেগুলো হলো ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক, সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার ও এংগেজমেন্ট, ফোরাম সাবমিশন, প্রশ্নোত্তর সাইটে সাবমিশন ইতাদি।

এই উপায়গুলো অনুসরণ করে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে পারলে সেটা হবে off-page SEO কৌশল। এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী পর্বে বিস্তর আলোচনা করবো, কিভাবে অফ পেজ SEO করতে হয় এবং off-page SEO Technique ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকবে সেখানে।

টেকনিক্যাল এসইও

সার্চ ইঞ্জিনের জন্য টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু অপ্টিমাইজ করে ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করানোর কৌশল হলো টেকনিক্যাল এসইও বা Technical SEO। এটা ওয়েবসাইটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টেকনিক্যাল এসইও করার কিছু প্রক্রিয়া আছে সেগুলো হলো

১. ওয়েবসাইটের স্ট্রাকচার ও ডিজাইন
২. এসএসএল (SSL) সার্টিফিকেট

৩. ইউআরএল (URL) স্ট্রাকচার
৪. পেজ লোডিং স্পীড

৫. মোবাইল ফ্রেন্ডলি
৬. ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন ইত্যাদি

ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কি? (What is Black Hat SEO?)

সার্চ ইঞ্জিনের নীতমালা ও নির্দেশনা ভঙ্গ করে অনৈতিক উপায়ে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজেকে র‍্যাঙ্ক করানোকে বলে ব্ল্যাক হ্যাট SEO। এটাকে সাধারনত অনৈতিক বা Unethical সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলা হয়।

কিছু টার্ম আছে সেগুলো গুগল অনুমোদন দেয় না, এধরনের টার্মগুলো ব্যবহার করে ও কূটকৌশল অবলম্বন করে ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্ক করালে তাকে Black Hat SEO বলে। টার্মগুলো হলো- কিওয়ার্ড স্টাফিং, লিংক ফার্ম, ডোরওয়ে পেজ ইত্যাদি।

কিওয়ার্ড স্টাফিং

কিওয়ার্ড স্টাফিং হলো কোনো একটা আর্টিকেল বা পেইজকে এমন সব সম্ভাব্য কিওয়ার্ড দিয়ে ভর্তি করে রাখা যা মানুষেরা সার্চ করতে পারে। এটা ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্যতম Technique। এই ধরনের আর্টিকেল সাধারনত মানুষের উপকারের জন্য লেখা হয় না, বরং ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং বাড়ানোর জন্য লেখা হয়।

কেউ কেউ আর্টিকেলে অতিরিক্ত কিওয়ার্ড প্লেস করে সেগুলো ওয়েবপেইজের কালার দিয়ে অদৃশ্য করে দেয় যাতে মানুষকে পড়তে না হয়, কিন্তু আর্চ ইঞ্জিন বটকে এগুলো পড়তে হয়। গুগল বা অন্যকোনো সার্চ ইঞ্জিন যদি বুঝতে পারে যে আপনি কিওয়ার্ড স্টাফিং করেছেন তাহলে ওয়েবসাইটকে কিক-আউট করে দিতে পারে।

 লিংক ফার্ম

লিংক ফার্ম হলো এমন একটি কূটকৌশল যেখানে একই ব্যক্তি একাধিক ওয়েবসাইট বানিয়ে প্রতিটি ওয়েবসাইট থেকে প্রতিটি সাইটকে ডু-ফলো ব্যাকলিংক দেয়। ধরুন, আপনার ৩টা ওয়েবসাইট আছে।

এখন আপনি একটা ওয়েবসাইটের পোস্টের লিংক অন্য একটা ওয়েবসাইটের পোস্টে ডু-ফলো ব্যাকলিংক হিসেবে দিলেন, এভাবে প্রতিটা সাইট থেকে ব্যাকলিংক অন্য একটা সাইটে দিতে থাকলেন।

এতে করে সবগুলো সাইটেই ব্যাকলিংকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলো, ধীরে ধীরে সাইট র‍্যাংক করবে কিন্তু গুগল একবার টের পেলে আপনার সবগুলো সাইটেই পেনাল্টি দিতে পারে। তাই এই ধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করা থেকে বিরত থাকবেন।

ডোরওয়ে পেজ

এটা হলো এমন এক ধরনের ওয়েবপেজ যেখানে ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী কোনো তথ্য থাকে না কিন্তু প্রচুর পরিমাণে কিওয়ার্ড প্লেস করা থাকে। এধরনের আর্টিকেল বা পেইজ থেকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো অনেক বেশি কিওয়ার্ড খুঁজে পায় যার ফলে র‍্যাঙ্কিং বাড়িয়ে দেয়।

আবার কিছু সময় এসব পেজে অন্য একটা পেইজের লিংক দেওয়া থাকে যেখানে পরবর্তীতে রিডাইরেক্ট হয়ে যায়।

 গ্রে হ্যাট এসইও কি? (What is Grey Hat SEO?)

আপনি যদি হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট SEO সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে গ্রে হ্যাট এসইও কি এবং কিভাবে করতে হয় সেটা বুঝা কঠিন হবে না। গ্রে হ্যাট SEO হলো ব্ল্যাক হ্যাট ও হোয়াইট হ্যাত এসইও এর সংমিশ্রণ, যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ White Hat SEO এবং বাকি ৩০ শতাংশ Black Hat SEO জড়িত থাকে।

দিন দিন এই ধরনের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারন এখানে পেনাল্টি খাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং তুলনামূলক সহজেই ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করানো যায়।

কীভাবে এসইও শেখা যায়?

SEO শেখার বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল আছে। অনলাইনে অনেক রিসোর্স পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করে এসইও শিখতে পারেন আর এই রিসোর্সগুলো বেশিরভাগ সময়ই ফ্রিতে পাওয়া যায়। ইউটিউবে এমন অনেক ভিডিও আছে (ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি ভাষায়) যেখানে ধারাবাহিক ভাবে এসইও শেখানো হয়।

আরো পড়ুন : ইউটিউব চ্যানেল দিয়েই আয় শুরু করতে পারেন

যেহেতু দিনে দিনে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই অনেক দেশি ও বিদেশি আইটি ফার্মগুলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের উপর প্রিমিয়াম কোর্স অফার করে থাকে। সেখানে ধীরে ধীরে ও হাতে-কলমে এটি শেখানো হয়।

বর্তমানে ফেসবুকে এমন কিছু গ্রুপ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে যেখানে অনেক SEO Expert রয়েছে। আপনি চাইলে সেই গ্রুপগুলোতে যুক্ত হতে পারেন, তাদের পোস্ট ও গাইডলাইনগুলো ফলো করে ফ্রিতে এসইও এর উপর ভালো ধারনা পেতে পারেন।

চাইলে আপনি আমাদের এই ধারাবাহিক পর্বগুলোও পড়তে পারেন। এখানে আমরা এসইও এর ফান্ডামেন্টাল ও অ্যাডভান্স বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো।

এসইও করে আয়

SEO করে প্রচুর পরিমাণে আয় করা যায়। এখন সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনলাইনে চলে আসছে। তাদের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে বিজ্ঞাপন দেখানোর পাশাপাশি লিড জেনারেটের জন্য এসইও এক্সপার্টদের হায়ার করে থাকেন। যারা প্রফেশনালি এসইও এর কাজ করেন এবং এই ফিল্ডে বেশ ভালো তারা মাসিক দেড়/দুই লাখ টাকাও আয় করে থাকেন।

এটা হলো মুলত ফ্রিল্যান্সিং, এখানে আয়ের কোনো সীমা নেই। আপনি যত ভালো ভাবে কাজ করতে পারবেন আপনার চাহিদাও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। তাই যদি নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাহলে এটা সম্ভাবনাময় একটা পেশা।

নিজেকে প্রস্তুত করুন, কাজ শিখুন, কঠোর পরিশ্রম করুন, বিভিন্ন ছোট-বড় প্রজেক্টে কাজ শুরু করুন তাহলে সফলতা একদিন অবশ্যই ধরা দিবে।

শেষ বার্তা

এটা ছিলো মূলত “এসইও কি ” ধারাবাহিক আর্টিকেলের প্রথম পর্ব। এখানে আমরা SEO বা Search Engine Optimization এর কিছু বেসিক বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেছি। আর সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলবো পরবর্তী আর্টিকেলগুলোতে। আশা করি আপনার সকলেই আমাদের সাথে থাকবে, সবগুলো পোস্ট পড়লে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবে।

এই বিষয়ে কোনো মতামত থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অথবা কোনো কিছু জানার থাকলে সেটাও জানাতে পারেন।তাহলে এসইও কি তা আজকের পোস্ট এ জানার চেষ্টা  করলাম, দ্বিতীয় পোস্ট এসইও এর অন্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাবো।

Leave a Reply