অন পেজ এসইও কি On Page SEO বাংলা টিউটোরিয়াল পর্ব-২

অন পেজ এসইও কি On Page SEO বাংলা টিউটোরিয়াল পর্ব-২

আপনি হয়তো একজন ব্লগার, কন্টেন্ট রাইটার বা এসইও শিখতে চাচ্ছেন। আপনি যে কাজটাই করতে চান না কেন এসইও (SEO) বা Search Engine Optimization এর গুরুত্ব ব্যাপক। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও এর কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ ও প্রাথমিক ধাপ হলো অন পেজ এসইও (On-Page SEO)।

আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে কথা বলবো অন পেজ এসইও কি, অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয় এবং এর গুরুত্ব কি সে সম্পর্কে। তাই এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী হবে যদি আপনি On-Page SEO শিখতে চান। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

অন পেজ এসইও
অন পেজ এসইও

অন পেজ এসইও কি? (What is on-page SEO)

অন পেজ এসইও হলো কয়েকটি ক্রিয়েটিভ কৌশলের সমন্বয়। এটা কোনো একক বা একটি কাজ না। আপনি যদি আপনার টার্গেটেড মানুষের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমে পৌছাতে চান তাহলে অবশ্যই ওয়েবসাইটের এসইও করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

আগের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছিলাম এসইও কি এবং এর ফান্ডামেন্টাল কিছু জিনিসপত্র নিয়ে। আপনি যদি সেই আর্টিকেলটি না পড়ে থাকেন তাহলে অনুরোধ করবো সেই আর্টিকেলটি পড়ে নিবেন। তাহলে এসইও এর যে ফান্ডামেন্টাল জিনিসপত্র আছে সে সম্পর্কে এবং এসইও এর প্রকারভেদ সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন।

এসইও কি SEO এসইও বাংলা টিউটোরিয়াল এসইও পর্ব-১

অন-পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের বাইরে না গিয়ে সাইটের ভেতরেই কিছু কৌশল প্রয়োগ করে কোনো আর্টিকেল বা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানো।

এজন্য কিছু কৌশল ও ট্রিক অ্যাপ্লাই করতে হয় আর্টিকেল লেখার সময় ও ওয়েবসাইট ডিজাইন করার সময়। আমরা মূলত সেই কৌশলগুলো সম্পর্কেই এখানে বিস্তারিত কথা বলবো।

অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয়? (How to do on-page SEO)

যেকোনো ওয়েবসাইটের হৃৎপিণ্ড হলো কন্টেন্ট। বলা হয়ে থাকে, কন্টেন্ট ইজ কিং (Content is king)। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন কোনো ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আর এই কন্টেন্টকেই যদি সঠিকভাবে অপ্টিমাইজ করা যায় যেন সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করে তাহলে এসইও এর বড় কাজটাই হয়ে যায়। পূর্বেই বলেছি অন পেজ এসইও বা অপ্টিমাইজেশন হলো কয়েকটি কার্যকরী কৌশলের সমন্বয়।

আর কন্টেন্ট অপ্টিমাইজের এই কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে টাইটেল, ট্যাগ, মেটা ডেসক্রিপশন সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেয় কিভাবে on page এসইও করতে হয়।

অন-পেজ অপ্টিমাইজেশন করার নিয়মঃ

কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research)

on page এসইও এর প্রাথমিক কাজ হলো কিওয়ার্ড রিসার্চ করা। কোনো আর্টিকেলকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য একটা সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনপ্রিয় SEO Expert, Brain Dean বলেন, “SEO is nothing without keyword research”

এ থেকেই আমরা একটা ধারণা পাই, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের জগতে সঠিকভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মূলত দুইভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়, একটি হলো কোনো টুল ব্যবহার করা এবং অন্যটি হলো ম্যানুয়ালি কিওয়ার্ড রিসার্চ করা।

অনেকেই টুল ব্যবহার করে কিওয়ার্ড রিসার্চ করলেও অল্প সংখ্যক মানুষই ম্যানুয়ালি কিওয়ার্ড রিসার্চ করে থাকে। তবে আমি দুইভাবেই কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পছন্দ করি।

কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য অনেক জনপ্রিয় ফ্রি ও পেইড টুলস আছে। সেগুলো হলো-
Ubersuggest
keyword Revealer
KeywordTool.io
Ahrefs
Keyword Surfer
Google Keyword Planner
Moz Keyword Explorer
Keyword Everywhere
Small SEO Tool

এগুলোই মূলত সবচেয়ে জনপ্রিয় কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস। কোনো আর্টিকেলকে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য লো কম্পিটিটিভ, বেশি সার্চ ভলিউম ও বেশি সিপিসিযুক্ত কিওয়ার্ড বাছাই করা উচিৎ। আপনার ওয়েবসাইট যদি একদম নতুন হয়ে থাকে তাহলে শুরুতেই এমন কোনো কিওয়ার্ড বাছাই করা উচিৎ না যেটার প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।

কারণ, নতুন কোনো ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করানো অধিক কষ্টকর পুরোনো ওয়েবসাইটের চেয়ে। নতুন ওয়েবসাইটের ডিএ (Domain Authority), পিএ (Page Authority), ব্যাকলিংক ইত্যাদি কম থাকে।

আর সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য ডিএ, পিএ, ব্যাকলিঙ্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে অফ পেজ এসইও আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর যেসব কিওয়ার্ডের এসইও ডিফিকাল্টি কম সেগুলোর উপর আর্টিকেল লিখলে খুব সহজেই তা গুগলে র‍্যাঙ্ক করে।

টাইটেল অপটিমাইজেশন (Title Optimization)

on page এসইও এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সঠিক নিয়মে টাইটেল অপ্টিমাইজ করা। আপনি যখন গুগলে কোনো কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করেন তখন গুগল আপনার সামনে অনেক সাইটের কন্টেন্ট এনে হাজির করে। এখানে প্রত্যেকটি কন্টেন্টের টাইটেল আলাদা।

আপনি আর্টিকেলের জন্য যত সুন্দর করে টাইটেল লিখতে পারবেন গুগল বট আপনার আর্টিকেলকে তত বেশি সাপোর্ট দিবে সবার উপরে র‍্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য। আর টাইটেল অবশ্যই আকর্ষনীয় ও আইক্যাচি হওয়া উচিৎ। তাহলে খুব সহজেই একজন ভিজিটরকে আপনার ওয়েবসাইটে আনতে পারবেন।

টাইটেলে অবশ্যই মেইন কিওয়ার্ডটা রাখার চেষ্টা করবেন। আর যদি টিপস টাইপের কোনো আর্টিকেল হয় তাহলে সংখ্যা উল্লেখ করবেন তাহলে টাইটেল আরো আকর্ষণীয় হয়। যেমনঃ অন পেজ এসইও এর ১০টি টিপস। এইধরনের টাইটেল দিতে চেষ্টা করবেন।

আরো পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও কেন শিখবো

আর টাইটেল অবশ্যই ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি হতে পারবে না। কেউ যখন কোনো কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করে তখন গুগলের সার্চ রোবট ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি কোনো টাইটেল পড়ে না এবং সার্চ রেজাল্টে তা শো করে না। তাই টাইটেল ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি যেন বড় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তবে খেয়াল রাখবেন টাইটেল যেন এমন না হয় যে, টাইটেল অনেক সুন্দর ও আইক্যাচি (Eye Catchy) এবং এরপর ভিজিটর যখন আর্টিকেলটি পড়বে তখন সে উপকারী বিষয়ে কিছুই পেলো না। তাহলে কোনো ভিজিটরই আপনার ওয়েবসাইটে দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকবে না, যার ফলে ওয়েবসাইটের রিডিং ডিউরেশন (Reading Duration) কমে যাবে।

আর রিডিং ডিউরেশন কম হলে ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করানোর ক্ষেত্রে খুবই বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর এই ধরনের টাইটেলকে বলা হয় ক্লিক বেট টাইটেল। তাই আর্টিকেলের টাইটেল শুধু আইক্যাচি ও আকর্ষণীয় হলেই হবে তা যেন সত্য ও পোস্টের সাথে সম্পৃক্ত হয়।

কিওয়ার্ড ডেনসিটি (Keyword Density)

আপনি কি জানেন, কিওয়ার্ড ডেনসিটি কাকে বলে? একটা আর্টিকেলে মেইন কিওয়ার্ড বা ফোকাস কিওয়ার্ডের ঘনত্বকে কিওয়ার্ড ডেনসিটি বলে। অর্থাৎ আপনি যেই মূল কিওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে আর্টিকেল লিখেছেন সেখানে মূল কিওয়ার্ডটা কতবার ব্যবহার করা হয়েছে তার পরিমাণকে কিওয়ার্ড ডেনসিটি (Keyword Density) বলা হয়।

সঠিকভাবে সম্পুর্ণ আর্টিকেল জুড়ে পরিমাণ মতো কিওয়ার্ড প্লেস করলে সেই আর্টিকেলকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করাতে সহজ হয়। কিন্তু ইচ্ছে মতো যেখানে সেখানে জোর করে ফোকাস কিওয়ার্ড প্লেস করা যাবে না। এতে আর্টিকেলটি পড়ে মূল জিনিস বুঝা কষ্টকর হয়ে যাবে এবং তাতে রিডারস বিরক্ত হয়ে পড়বে।

আর একটা আর্টিকেলে ইচ্ছে মতো যেখানে সেখানে অনেক পরিমান কিওয়ার্ড বসালেই গুগল আপনাকে র‍্যাঙ্কিং দিবে না। বরং এটা করলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে পেনাল্টি দিতে পারে। আর্টিকেলে অযাচিত কিওয়ার্ড বসালে সেটাকে কিওয়ার্ড স্টাফিং বলে যেটা ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর আওতাভুক্ত। আর সঠিকভাবে ওয়েবসাইট ও কন্টেন্টের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করতে হলে মোটেও ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর প্রশ্রয় নিলে হবে না।

কিওয়ার্ড যেন বেশি পরিমাণ না হয় আবার খুব অল্প পরিমাণেও না হয় সেটা পরিমাপ করার জন্য এসইও এক্সপার্টরা কিছু সাজেশন দেয়। তারা বলেন যে, কিওয়ার্ড ডেনসিটি ০.৫-০.৭% হওয়া ভালো। অর্থাৎ ১০০০ ওয়ার্ডের কোনো আর্টিকেল লিখলে সেখানে ৫-৭ বার ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যায়, এর চেয়ে বেশি না।

ইমেজ অপটিমাইজেশন (Image Optimization)

একটা কথা প্রচলিত আছে, “One Picture Says Thousands Word”। মানে হলো, একটা ছবি হাজার শব্দ বলতে পারে। কোনো আর্টিকেলকে আরেকটু বেশি আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ছবি ব্যবহার করা উচিৎ। র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে গুগল নিজেই বলেছে, আর্টিকেলে যত বেশি সম্ভব ছবি যুক্ত করা যাবে, ছবি ব্যবহার করলে কন্টেন্ট আর বেশি ভালোভাবে ইমেজ অপটিমাইজ হয়।

এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আর্টিকেলকে গুগলের প্রথম পেজে আনার জন্য ইমেজ অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখবেন আপনার পোস্ট হয়তো গুগলের প্রথম পেজে র‍্যাঙ্ক করেনি কিন্তু ইমেজ হয়তো র‍্যাঙ্ক করে গেছে। আপনি ইমেজ থেকে ভালো পরিমাণ ট্রাফিক পেতে পারেন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিভাবে ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশন করতে হয়? কয়েকটি উপায়ে ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশন করা যায়। যেমনঃ ইমেজকে যথাসম্ভব ছোট সাইজের রাখতে হবে এবং WEBP ফরম্যাটে রাখতে পারলে ভালো তবে JPG রাখা যেতে পারে। তাহলে ওয়েবসাইটের স্পিড বৃদ্ধি পাবে। আর ইমেজ তৈরি বা ক্রপ করার সময় ল্যান্ডস্কেপ সাইজে তৈরি করবেন। পোস্টে ইমেজ যুক্ত করার সময় অল্টার ট্যাগ (Alter Tag) ও ক্যাপশন ব্যবহার করা উচিৎ।

এটাই ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশনের মূল বিষয়। গুগল অনেক কিছু বুঝতে পারলেও কনো ইমেজ দেখে বুঝতে পারে না সেটা কি সম্পর্কে। তাই আপনার ছবিটা কিসের সেটা গুগল বটকে বুঝানোর একমাত্র উপায় হলো ক্যাপশন ও অল্টার ট্যাগ ব্যবহার করা।
আর্টিকেলের মূল বা ফোকাস কিওয়ার্ডটা ইমেজের অল্টার ও ক্যাপশনে রাখতে হয়। তাহলে সেটা ভালোভাবে ইমেজ অপটিমাইজ হবে।

Tittle And Meta Description Optimization
Tittle And Meta Description Optimization

মেটা ডেসক্রিপশন (Meta Description)

আপনি যখন ওয়েবসাইটে কোনো একটা আর্টিকেল পাবলিশ করেন এবং তা সার্চ ইঞ্জিন ক্রল করে তখন সার্চ ইনিন বটগুলো সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে দেখে না। বটগুলো মূলত সেই আর্টিকেলের মেটা ডেসক্রিপশন পড়ে বুঝে ফেলে আর্টিকেলটা কি সম্পর্কে লেখা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে আপনার আর্টিকেল সার্চ রেজাল্টে দেখায়। অন পেজ এসইও এর জন্য মেটা ডেসক্রিপশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা হলো সম্পূর্ণ আর্টিকেলের একটা সারাংশ।

আপনি যখন গুগলে কোনো কিছু লিখে সার্চ করেন এবং অনেকগুলো ওয়েবসাইটের পোস্ট দেখতে পান তখন সেখানে মূলত আর্টিকেলের টাইটেলটি বড় করে দেখানো হয়। যেমনটা উপরের ছবিতে দেখতে পারছেন।

আর এই টাইটেলের নিচেই কিছু শব্দের প্যারাগ্রাফ থাকে, সেটাকে মেটা ডেসক্রিপশন (Meta Description) বলে। মেটা ডেসক্রিপশন বেশি সংখ্যক শব্দ ব্যবহার করা যাবে না।

সর্বোচ্চ ১৬০ ক্যারেক্টারের মেটা ডেস্ক্রিপশন লেখা যায়, এর বেশি ওয়ার্ড লিখলেও সার্চ ইঞ্জিন সেটা পড়ে দেখে না। আর এটা এমনভাবে লেখা উচিৎ যেন সার্চ ইঞ্জিন বট সেটা পড়লে খুব সহজেই বুঝতে পারে আপনার আর্টিকেলটা কোন বিষয়ে লেখা হয়েছে।

এজন্য এখানে একবার হলেও ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। সেই সাথে সম্পূর্ণ আর্টিকেলকে ছোট করে সারাংশ আকারে লিখতে হবে। এখানে মূল কিওয়ার্ড ছাড়াও সেগুলোর কিছু সিমিলার কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মেটা ডেসক্রিপশন আরো স্ট্রং হবে এবং সার্চ ইঞ্জিন খুব সহজেই আর্টিকেল সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবে।

ইউআরএল অপ্টিমাইজেশন (URL Optimization)

ইউআরএল অপ্টিমাইজেশন বলতে বোঝায় পার্মালিংককে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে লেখা। ধরুন আপনি “Best 5 Bike in Bangladesh 2022 ” কিওয়ার্ড নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখছেন।

এজন্য আপনার পোস্টের ইউআরএল বা পার্মালিংক “sitename.com/best-bike-in-bd” এমন হওয়া উচিৎ। অর্থাৎ ইউআরএলে মূল কিওয়ার্ডটা রাখতে হবে আর কিওয়ার্ড বেশি বড় করা যাবে না। পার্মালিংক বেশি বড় হলে সেটাকে এসইও ফ্রেন্ডলি পার্মালিংক বলা যাবে না।

আর পার্মালিংকে সংখ্যা ব্যবহার করা উচিৎ না। আপনার ওয়েবসাটের লেখাগুলো যদি বাংলা ভাষায় হয় তাহলে পার্মালিংক বাংলায় লেখাই উত্তম। ওয়ার্ডপ্রেসে বাংলায় ইউআরএল লেখা গেলেও ব্লগারে বাংলায় লেখার সুযোগ নেই। তাই আপনি যদি ব্লগার ব্যবহার করেন তাহলে ইংরেজিতেই পার্মালিংক বানাতে হবে।

ইন্টারনাল লিংকিং (Internal Linking)

ইন্টারনাল লিংকিং হলো নিজের ওয়েবসাইটের কোনো একটি পেজের লিংক আরেকটি পেজে যুক্ত করা। এটা অন পেজ এসইও (On-Page SEO) তে খুব ভালো গুরুত্ব রাখে। আপনার একটি পোস্টে যদি সেই রিলেটেড কয়েকটা পোস্ট উল্লেখ করে দেন তাহলে অনেকেই সেখানে ক্লিক করে অন্য পোস্টটি পড়বে।

এতে করে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমে যাবে। আর যে ওয়েবসাইটে বাউন্স রেট বেশি এবং রিডিং ডিউরেশন কম সেগুলোকে গুগল র‍্যাঙ্কিং দিতে চায় না।

আরো পড়ুন: ইউটিউব চ্যানেল দিয়েই আয় শুরু করুন

ইন্টারনাল লিংকিং করলে যেহেতু একটা পেজ থেকে আরেকটি পেজে ভিজিটর যায় সেহেতু তারা আপনার ওয়েবসাইটের ভেতরে ঘুরতে থাকে। এটা এসইও এর জন্য একটা ভালো দিক।

এক্সটারনাল লিংকিং (External Linking)

এক্সটারনাল লিংকিং হলো আপনার ওয়েবসাইটে অন্য কোনো সাইটের লিংক করা। পোস্টে বিভিন্ন তথ্যের রেফারেন্স দিতে গিয়ে মূলত এটা ব্যবহার করা হয়।

বাহিরের ভালো ওয়েবসাইটের কোনো লিংক ব্যবহার করে গুগল ধারণা পায় যে, আর্টিকেলটা বেশ গবেষণা করে লেখা হয়েছে এবং এখানে অনেক তথ্য আছে। আর সেজন্য স্বভাবতই গুগল এই ধরনের পেজকে বেশি পুশ করে সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে আসতে।

লোডিং স্পিড অপ্টিমাইজেশন (Loading Speed Optimization)

On-Page SEO এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অপ্টিমাইজ করা। যে সাইট লোড হতে বেশি সময় নেয়, সেসকল ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেশিক্ষণ থাকে না, বিরক্ত হয়ে সাইট থেকে বেরিয়ে যায়।

এতে করে সাইটের বাউন্স রেট বাড়ে এবং রিডিং ডিউরেশন কমে যায়। তাই যতটা সম্ভব সাইটকে ফাস্ট লোডেড এবং রেসপন্সিভ রাখা উচিৎ।

এজন্য ভালো হোস্টিং ব্যবহার করা সহ সঠিকভাবে ইমেজ অপ্টিমাইজ, রিসাইজ করতে হবে। যত্রতত্র ইমেজ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে, অপ্রয়োজনীয় জাভা স্ক্রিপট মুছে ফেলতে হবে।

অন পেজ এসইও এর গুরুত্ব (Importance of On-Page SEO)

কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগের ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য মূলত এসইও করা হয়ে থাকে। আর এসইও এর যতগুলো প্রকারভেদ আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো On Page Search Engine Optimization।

আপনি যতই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক আনেন না কেন এতে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন না, আর গুগলে সার্চ করলেও কোনো পেজে আপনার ওয়বসাইট খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তাই কোনো একটা ওয়েবসাইট, ব্লগ বা ইকমার্স প্রতিষ্ঠানকে মানুষের কাছে পরিচিত করানোর জন্য অন পেজ অপ্টিমাইজেশনের গুরুত্ব অনেক বেশি।

বর্তমান ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে অন পেজ এসইও এক্সপার্টদের অনেক চাহিদা রয়েছে এবং তাদের পারিশ্রমিকও অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই কেউ যদি ক্যারিয়ার হিসেবে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনকে বেছে নিতে চান তাহলে তার সিদ্ধান্ত ভুল হবে না।

আর প্রতিনিয়ত সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান অনলাইনে মুভ করছে, যার কারণে এই ধরনের ডিজিটাল মার্কেটারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

আশা করি অন পেজ এসইও সমন্ধে ভালো একটা ধারণা পেয়েছেন , পরবর্তী পর্ব দেখার আমন্ত্রণ রইলো।

Leave a Reply