মাশরুম চাষ পদ্ধতি শিখে ঘরে বসেই আয় করুন

অত্যন্ত মজাদার, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে আমাদের কাছে বেশ  পরিচিত একটি খাবার হল মাশরুম। স্বাদে, গুনে, মানে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ বিধায় সকলের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় স্থান পায় মাশরুম। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই উপাদানে ইতিমধ্যে আমাদের দেশে সকলের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে মাশরুম খুলে দিয়েছে এক বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার। তাই কিভাবে মাশরুম চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত থাকছে আজকের আলোচনায়। 

মাশরুম-চাষ-পদ্ধতি
মাশরুম-চাষ-পদ্ধতি

মাশরুম চাষ পদ্ধতি চাষের উপকরণ

বর্তমান সময়ে একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য উপাদান হিসেবে আমাদের মাশরুম ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। মাশরুম যে শুধুমাত্র আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে তা কিন্তু নয়। বরং মাশরুম হতে পারে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি। কারণ শুধুমাত্র মাশরুম চাষ করে আপনি অর্জন করতে পারেন অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা। 

মাশরুম চাষ পদ্ধতি যতটা সহজ ভাবা হয় ঠিক ততটা সহজ নয়। তাই মাশরুম চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপকরণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

  • মূলধন 

কোন ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ হল অর্থ। যেকোনো ব্যবসায়ের শুরুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ ছাড়া আপনি কখনো এগিয়ে যেতে পারবেন না। তাই আপনি যদি মাশরুম ব্যবসা করেন আপনার প্রধান উপকরণ হবে অর্থ। আপনি এই ব্যবসায়ের ৫০০০-৫০০০০০ হাজার টাকার পুঁজি দিলেই এই বয়স আপনি সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। 

  • প্রশিক্ষণ 

আপনি মাশরুম চাষ করতে হলে সবার প্রথমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। যেহেতু মাশরুম সকল ধরণের পরিস্থিতিতে উপযুক্তভাবে বেড়ে উঠেনি এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত প্রশিক্ষণ আপনাকে এটি চাষের ক্ষেত্রে বেশ সাহায্য করবে। মাশরুম উন্নয়ন ইনিস্টিটিউট কিংবা প্রয়োজনীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে আপনি প্রশিক্ষণ এর জন্য আবেদন করতে পারেন। 

  • যন্ত্রপাতি 

একটি ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার মূলধনের পর প্রয়োজন পড়বে নিযুক্ত যন্ত্রপাতি। মাশরুম চাষ এর লক্ষ্যে বীজ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে রিলাইজেশন কাম ইনোকুলেশন চেম্বার। মাশরুম উন্নয়ন  ইনিস্টিটিউটের এর সংশ্লিষ্ট উপ পরিচালক গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কার করেন স্টেরিলাইজেশন কাম ইনোকুলেশন চেম্বার যার মাধ্যমে মাশরুমের বীজসমূহ একইসাথে জীবাণুমুক্ত করা যাবে এবং সেই সাথে বীজ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে বেশ সাহায্য করবে। 

আরো পড়ুন: স্পিরুলিনা চাষ পদ্ধতি এবং খাওয়ার নিয়ম

মাশরুম বীজের দাম

মাশরুম চাষ করার ক্ষেত্রে আপনার অন্যতম একটি উপকরণ হল বীজ। কারণ আপনি যখন বৃহৎ পরিসরে বিজনেস শুরু করবেন আপনাকে তখনি আপনার বীজের প্রয়োজন পড়বে। বর্তমানে আপনি কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট ,মাশরুম গবেষণা সংস্থা কিংবা কোন ভালো মানের প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি আপনার প্ৰয়োজনীয় মাশরুম বীজ পেয়ে যাবেন। 

আপনি যদি মাশরুম বীজ কিনতে চান তাহলে আপনার প্রতি কেজিতে ৭৫  টাকা গুনতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি অন্য জাত কিংবা ব্র্যান্ডের থেকে কিনতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনার বীজের দাম তার জাতের উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে। 

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি
মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

আপনি যদি মাশরুম চাষ করার কথা চিন্তা করেন তাহলে আপনি ভালো মানের উন্নত জাতের মাশরুম এক্ষেত্রে বেছে নেওয়া উত্তম। এক্ষেত্রে ওয়েস্টার মাশরুম বেছে নিলে আপনার মুনাফার আশাও বেড়ে যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মাশরুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে –

  • মাশরুম চাষের জন্য প্রথমে এক ইঞ্চি মাপের খড় আপনাকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এটি জীবাণুমুক্ত করার জন্য পরিমাণ-মতো ফুটন্ত  গরম পানির মধ্যে ২০ মিনিট  চুবিয়ে রাখা উচিত। অথবা ব্লিচিং পাউডার কিংবা চুনযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পড়ুন ২৪ ঘণ্টা। 
  • পরবর্তীতে তা ভালোভাবে শুক্তিয়ে নিতে হবে যা হাতে ভেজা ভাব থাকে। একটি বড় পলিথিন ব্যাগ নিয়ে সেই ব্যাগের মধ্যে খড়গুলো রাখতে হবে ধীরে ধীরে কোন ঘেঁষে বীজগুলো ছিটিয়ে দিতে হবে। 
  • এভাবে কয়েকটি লেয়ার করে খর আর বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রায় ৭-৮ টি লেয়ারে এইভাবে বীজগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে। তবে যাতে খর জমে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই খর দেওয়ার সময় হালকা চাপ দিতে হবে। পরবর্তীতে পলি-ব্যাগের মুখটি শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে।
  •  প্যাকেটটি বন্ধ করার পর পলি-ব্যাগের মধ্যে সাইজ অনুযায়ী ১০-১২ টি ছিদ্র করতে হবে এবং সেই ছিদ্রগুলোতে যাতে বায়ু চলাচল স্বাভাবিক থাকে আপনাকে তুলো দিয়ে ছিদ্র গুলো আটকে রাখতে হবে। 

আরো পড়ুন: কবুতর পালন করে আপনিও সফল হতে পারেন

  • পরবর্তীতে বীজ রোপনকৃত প্যাকেটই ১০ দিনের জন্য কোন অন্ধকার ঘরে রেখে দিতে হবে। তবে ঘরটিতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকে আপনাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবার যাতে কোন ধরণের পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব না পরে সে দিকেও আপনাকে ভালো দৃষ্টি রাখতে হবে। 
  • বেশ কয়েকদিন পর সে পলিথিন ব্যাগ থেকে সাদা সাদা এক ধরণের আস্তরণ দেখা দিবে। দেখা মাত্রই আপনি তা আলো যুক্ত স্থানে রাখবেন এবং সেই সাথে তুলোর মুখ খুলে দিবেন। সেই সাথে পুরো পলিথিনের কানায় কানায় মাশরুম পূর্ণ হয়ে যাবে। 

মাশরুম চাষে লাভ কেমন

আপনি চাইলে মাশরুমকে ড্ৰাই করে অনলাইন বিজনেস করে আয় করে পারবেন কিংবা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ করে দিবে মাশরুম। আর মাশরুম বিক্রি করে আপনি সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। 

মাশরুম এর প্রকারভেদ

মাশরুম বেশ কয়েকদিন আগে এটি আমাদের কাছে শুধুমাত্র ছত্রাক হিসেবে পরিচিতি ছিল। গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে এটি পরিচিত ব্যাঙের ছাতা নামে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের মধ্যে একটি খাদ্য উপাদান হিসেবে মাশরুম এর চাহিদা বেশ বেড়ে গিয়েছে। কারণ মাশরুম হল প্রোটিন এর এক অন্যতম উৎস। প্রায় অনেক ধরণের মাশরুম আমরা চারপাশে দেখলেও সকল প্রকার মাশরুম কিন্তু মোটেও খাওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মাশরুমের প্রকারভেদ সম্পর্কে –

  • টুথ ফাংগি -বিষাক্ত নয় তবে মোটেও খাবার হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত নয়।
  • স্টিঙ্কহর্নস- এর গন্ধ ভালো নয়, কিন্তু খাবার হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত।
  • পাফবলস -খাবার হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত। 
  • সাইকেডেলিক মাশরুম -এই মাশরুমকে শ্রুমস কিংবা ম্যাজিক মাশরুম হিসেবেও ঢাকা হয়। এটি এক ধরণের সাইডিকেলিক ড্রাগ। যা বিভিন্ন ব্যাকারী আইটেম এর সাথে ড্রাগ হিসেবে সেবন করা হয়। এটি বেশ বিষাক্ত। খাবার হিসেবে গ্রহণের অনুপযুক্ত।  
  • পলিপোরেস -বেশ সুস্বাদু এবং খাবার হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত একটি মাশরুম হল এটি।
  • জেলি ফাঙ্গি -এই মাশরুমটি তেমন সুস্বাদু না হলেও খাবার হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত মাশরুম হল এটি। 
  • কাপ ফাঙ্গি –খাবার উপযোগী একটি মাশরুম হল এটি। 
  • কোরাল ফাঙ্গি -খাবার উপযোগী একটি মাশরুম হল এই মাশরুম।
  • চান্টারেলেস-খাবার উপযোগী একটি মাশরুম হল এটি। 
  • ব্র্যাকেট ফাঙ্গি- মানব উপকারী একটি মাশরুম হল এটি। বিভিন্ন স্থান ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনকারী সামগ্রী হিসেবে ব্যবহারটি হয় এই মাশরুম।
  • বোলেটেস-ভক্ষণ-যুক্ত,সুস্বাদু এবং সকলের বেশ পছন্দের একটি মাশরুম হল বোলেটস। 
  • এগারিক্স –খাবারের উপযোগী হলোই ই মাশরুমের মধ্যে বিষাক্ত এবং মাদক জাতীয় ঝাজালো। 

ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি

বাড়িতে চাষযোগ্য একটি মাশরুম এর মধ্যে অন্যতম হল ওয়েস্টের মাশরুম কিংবা ঝিনুক মাশরুম। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ওয়েস্টের মাশরুমের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে। 

উপকরণ 

  • খড় 
  • পলিথিন ব্যাগ 
  • ব্যভিষ্টিন 
  • ব্লিচিং পাউডার 
  • স্পুন 
  • এই মাশরুম চাষ করার জন্য আপনাকে সবার আগে ধান বা গমের খর সংগ্রহ  করে তা ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত কেটে রাখতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে এক গ্রাম ব্যভিস্টোন মিশিয়ে তার মধ্যে কাটা খড় জীবাণুমুক্ত করার জন্য চুবিয়ে রাখতে হবে। ব্যভিস্টোন খরকে জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এই খর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সিদ্ধ করে পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি এক গ্রাম চুনের সাথে ২ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার পানিতে মিশিয়ে  সেই পানিতে খড় চুবিয়ে রাখেন তাহলে  খড় সিদ্ধ করার প্রয়োজন হবে না। 
  • ভেজা খড়গুলো আপনি একটি ঝুড়িতে পানি শুকিয়ে রাখার জন্য  ছেড়ে দিন। 
  • এরপর একটি পলিথিন নিন। সেই পলিথিনের খর থেকে পানি ছেড়ে গেলে তা ছয় ইঞ্চি আস্তরণ করে আপনি খর পলিথিনে ভোরে নিন। 
  • খর ভরা হলে তার উপর বীজগুলো ছাড়িয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার আস্তরণ করে সম্পূর্ণ বীজ  গুলো ভর্তি করে নিন। 
  • পরিবর্তিত পলি-ব্যাগটি ছিদ্র কলোরে তা তুলো দিয়ে মুখ বন্ধ করে আপনি ঝুলিয়ে দিন। কয়েক সপ্তাহের ,মধ্যে বীজ থেকে ওয়েস্টের মাশরুম গজিয়ে উঠবে।   

আরো পড়ুন: ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি ও উপকারিতা

মিল্কি মাশরুম চাষ পদ্ধতি

গরমকালে চাষযোগ্য একটি মাশরুম হিসেবে বেশ পরিচিতি একটি জাত হল মিল্কি মাশরুম। এই মাশরুম গ্রীষ্মকালে অধিক ফলন দেয় বিধায় সকলে এই জাতীয় মাশরুম চাষের দিকে ঝুঁকছে। মিল্কি মাশরুমের চাষ পদ্ধতি ওয়েস্টার মাশরুমের চাষ পদ্ধতির মতো। তবে এটি চাষের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা আপনাকে অবলম্বন করতে হবে। সতর্কতা সমূহ হল- 

  • যে খড়গুলো ব্যবহার করা হবে তা যেন পুরোপুরি সোনালী রঙের হয়। 
  • প্রতি ব্যাগে বীজের সাথে আস্তরণের জন্য প্রায় ১০-১৪ কেজি খর এক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে। 
  • যে পানিতে খর ফুটিয়ে নিতে হবে তার তাপমাত্রা যেন ৬০-৫৫ ডিগ্রি সেন্ট্রি-গ্রেটে হয়। 
  • গরম পানিতে কখনোই খর ১ ঘণ্টার বেশি চুবিয়ে রাখা উচিত নয়। 
  • খড়ের ব্যাগগুলো ঝুলিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অন্তত সর্বনিম্ন ১৬ ঘণ্টা রাখতে হবে। 

উপকরণ 

  • খড় 
  • পলিথিন ব্যাগ 
  • ব্যভিষ্টিন 
  • ব্লিচিং পাউডার 
  • স্পুন 
  • এই মাশরুম চাষ করার জন্য আপনাকে সবার আগে ধান বা গমের খর সংগ্রহ  করে তা ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত কেটে রাখতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে এক গ্রাম ব্যভিস্টোন মিশিয়ে তার মধ্যে কাটা খড় জীবনামুক্ত করার জন্য চুবিয়ে রাখতে হবে। ব্যভিস্টোন খরকে জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এই খর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সিদ্ধ করে পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি এক গ্রাম চুনের সাথে ২ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার পানিতে মিশিয়ে  সেই পানিতে খড় চুবিয়ে রাখেন তাহলে  খড় সিদ্ধ করার প্রয়োজন হবে না। 
  • ভেজা খড়গুলো আপনি একটি ঝুড়িতে পানি শুকিয়ে রাখার জন্য  ছেড়ে দিন। 
  • এরপর একটি পলিথিন নিন। সেই পলিথিনের খর থেকে পানি ছেড়ে গেলে তা ছয় ইঞ্চি আস্তরণ করে আপনি খর পলিথিনে ভরে নিন। 
  • খর ভরা হলে তার উপর বীজগুলো ছাড়িয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার আস্তরণ করে সম্পূর্ণ বীজ  গুলো ভর্তি করে নিন।
  • পরিবর্তিত পলি-ব্যাগটি ছিদ্র করে তা তুলো দিয়ে মুখ বন্ধ করে আপনি ঝুলিয়ে দিন। কয়েক সপ্তাহের, মধ্যে বীজ থেকে মিল্কি মাশরুম গজিয়ে উঠবে।   

আরো পড়ুন: দেশি মুরগি পালন করে কীভাবে লাভবান হওয়া যায়

মাশরুম চাষ প্রশিক্ষণ কোথায় হয়

মাশরুম চাষ পদ্ধতি জানার জন্য বা শিখার জন্য আপনাকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে । মাশরুম চাষ বাংলাদেশে বয়ে এনেছে ব্যাপক সম্ভাবনার খাত। তাই বর্তমানে অনেকে এগিয়ে এসে নিজের ভাগ্য বদলের জন্য বেছে নিচ্ছে এই সেক্টরকে। বর্তমান মাশরুম চাষাবাদকে ভিত্তি করে সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যা হাজার হাজার নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের মাশরুম চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পর্কে

  • মাশরুম উন্নয়ন ইনিস্টিটিউট

সাভার

কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের অধীনে নির্মিত এই ইনিস্টিটিউটটি বর্তমানে মাশরুম প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। এই ইনিস্টিটিউটের অধীনে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ৩ মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রশিক্ষণ শেষ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

হিউম্যান ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি 

মৌচাক 

  • শেফা মাশরুম 

সাভার বাস-স্ট্যান্ডে পুরাতন কাস্টমস অফিসের পাশে

  • গ্রিন বাংলা মাশরুম কর্নার

মোবাইল নাম্বার : 01716-884368 

বি-১৯, বিটিআরসি মার্কেট, বগুড়া। 

  • খাদেম মাশরুম সেন্টার

মোবাইল নাম্বার : 01916-820458, 01715-475012

৫৮১/সি, খিলগাঁও, ঢাকা-১২২৯। 

  • সৈকত মাশরুম প্রকল্প

মোবাইল নাম্বার : 01716-408880 

১০৪/১ কাতলাপুর, সাভার, ঢাকা

  • এম. আর. টি মাশরুম প্রজেক্ট

মোবাইল নাম্বার : 01715-873780

মডেল কলেজ রোড, ডগড়মোড়া, সাভার, ঢাকা

  • তাজা, শুকনা এবং মাশরুম স্পন (বীজ) বিক্রয় কেন্দ্র

সুখী মাশরুম

মোবাইল:নাম্বার  01912-411755 

১৯/৯, আই ব্লক, ব্যাংক কলোনি, সাভার, ঢাকা

  • মাশরুম বীজ, মাশরুমের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম (অটোক্লেভ মেশিন, পিঁপিঁ, নেক, তুলা, রাবার) বিক্রয় কেন্দ্র
  • উদ্যম মাশরুম কর্নার 

মোবাইল নাম্বার : 01816-430266, 01716-503830, 01199-161291 

বি-১১১, সোবাহানবাগ, সাভার, ঢাকা

আরো পড়ুন: কবুতর পালন করে আপনিও সফল হতে পারেন

মাশরুম কোথায় বিক্রি করা যায়

সময়ের সাথে মানুষের জীবনে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে। পরিবর্তন এসেছে তাই মানুষের খাবার দাবারেও। মাশরুম একটি ছত্রাক হলেও এক খাদ্যগুণাগুনে বেশ অন্যতম খাদ্য উপাদান হল এটি। তাই দেশ থেকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রেস্টুরেন্ট ,হোটেল, সুপার শপে বেশ চাহিদা সম্পন্ন একটি উপাদান হল মাশরুম। 

তাই আপনি যদি মাশরুম চাষ করেন তাহলে কি পরিমাণ লাভবান হতে পারবেন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আপনি মাশরুম চাষ করলে তা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ,ফাইভ স্টার হোটেল ,সুপার শপ এ আপনি বিক্রি করতে পারবেন। আপনি চাইলে এছাড়াও লোকাল বাজারে, মুদি দোকানে, ব্যস্ত স্ট্যান্ডে বিক্রির জন্য দিতে পারেন মাশরুম। 

মাশরুম চাষে আয় ব্যয়

সময়ের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে মানুষ উদ্যোগী হয়েছি মাশরুম উৎপাদনে। তৃনমূল বাজারের চাহিদার কথা বিবেচনার করে এবং স্বল্প পরিশ্রমের লাভ করা যায় বিধায় বর্তমান মানুষ নিজেদের জন্য সম্ভাবনার খাত হিসেবে বেছে  নিচ্ছে এই সেক্টরকে। তাই আপনি যদি মাশরুম চাষে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশিক্ষণ নিয়ে বৃহৎ পরিসরে মাশরুম চাষাবাদ শুরু করেন তাহলে আপনি প্রতি প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা এবং বছরে লক্ষাধিক টাকা করতে পারবেন। 

শেষ কথা 

আশা করি আপনারা মাশরুম চাষ পদ্ধতি সমন্ধে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন ,  মাশরুম আমাদের জন্য কৃষি খাতে এক বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করেছে। অদূর ভবিষ্যতে তাই মাশরুম চাষের দিকে উদবুদ্ধ করার লক্ষে নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া এখন সময়ের দাবি। 

Leave a Reply