বিস্ময়কর কলার উপকারিতা গুলো যেনে নিন

কলার উপকারিতা

কলার উপকারিতা

বিস্ময়কর কলার উপকারিতা গুলো যেনে নিন

কলা বা Banana খেতে কে না ভালোবাসে, বহু গুনে গুণান্বিত কলার উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা ফল কিনতে গেলে আগেই তাকাই বিদেশি দামি ফলের দিকে, তাই আজ আমারা কম দামি কলার বহু দামি গুনের কথা আলচনা করব।

এই কলার গুনের কথা শুনলে অবাক হবেন, আমাদের দেশে নানা জাতের কলা পাওয়া যায়। যেমন সবরি কলা ,কবরি কলা,সাগর কলা ,কাঁঠালি কলা, বিচি কলা সহ আরো অনেক জাতের কলা আর একেক কলায় একেক গুন রয়েছে।

কলার খাদ্যগুণ জেনে নিন

কলার খাদ্যগুণ প্রতি ১০০ গ্রাম হিসাব দেয়া হোলও

আমিষ এর শতাংশ —— ১.২%
খনিজ লবণ এর শতাংশ – ০.৮%
পানি এর শতাংশ ———৭০.১%
ফ্যাট (চর্বি) শতাংশ ——- ০.৩%
শর্করা এর শতাংশ ———৭.২%
আঁশ এর শতাংশ ———-০.৪%

ভিটামিন এবং খনিজ লবণ
আয়রন—— ———–০.৬মি.গ্রা.
ফসফরাস—— ——–৫০মি.গ্রা.
ক্যালসিয়াম————-৮৫মি.গ্রা.
ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স– ৮মি.গ্রা.
মোট ক্যালরি————১১৬।

কলা খাওয়ার উপকারিতা বা  কলার উপকারিতা গুলো একে একে জেনে নেই

কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক কলার মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্ন গুন যা দেহের রোগ প্রতিরোধে কাজ করতে সাহায্য করে
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই নিয়মিত কলা খাওয়ার অভ্যাস গরে তুলুন যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকার হবে।

সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও ফাইবার দেহে পুষ্টি যুগিয়ে শরিরকে সুস্থ্য রাখে এবং কষ্টকাঠিন্য দূর করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন রোজ খাবারের তালিকায় পাকা কলা রাখতে। শরীরে শক্তি বৃদ্ধির জন্য সকালে কলা খেতে পারেন। তবে খালি পেটে কলা খাওয়া ঠিক নয়। ক্যালরির চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে সহজলভ্য ফল কলা।

সকালের নাস্তায় টোস্ট, ডিম, অথবা কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে কলা খেতে পারেন। এতে করে পুষ্টিও পাওয়া যায় আবার পেটও ভরা থাকে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত। যারা রোজ সকালে নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তারা সকালের নাস্তায় অবশ্যই কলা রাখার চেষ্টা করবেন। তবে খালি পেটে না খেয়ে কলা ভরা পেতে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়

কিডনি সুস্থের জন্য কলা

কলায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি কিডনির কায্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে । সপ্তাহে ২- ৩টি কলা খেলে তাদের কিডনির রোগের সমস্যা খুবই কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পাকা কলার উপকারিতা

পাকা কলার উপকারিতা অনেক পাকা কলাতে রয়েছে প্রচুর কাবোহাড্রেইট যা খাবার সহজে হজম করে।এছাড়াও কলা একটি আঁশযুক্ত ফল,এ জন্য কলা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে । রাতে তেল ও মসলা জাতীয় খাবার খেলে অস্তি লাগে সকালে পেট ভারি ভারি লাগে । এসময় একটি পাকা কলা খেলে অনেকটাই স্বস্তি বোধ হয়,কারণ পাকা কলাতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট।

সাগর কলার উপকারিতা

বিভিন্ন প্রজাতির কলার মধ্যে সাগর কলা অন্যতম। সাগর কলা বিভিন্ন গুণাগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল এবং স্বাদেও সুস্বাদু। সাগর কলাতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপাদান যথা আমিষ, ভিটামিন, এবং খনিজ। সাগর কলার খোসা দাদের ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। চুলকালে সেই অংশে কলার খোসা ঘষে দিলে চুলকানি বন্ধ হবে এবং দ্রুত দাদ সেরে যাবে। সাগর কলার মিউসিলেজ বির্য রস বৃদ্ধি করে আর ফ্রুকটোজ শুক্রাণুর খাদ্য যোগায়।

আমরা সবসময় আমাদের বড়দের থেকে শুনে থাকি ঠাণ্ডা লাগলে কলা খাওয়া নিষেধ। ঠাণ্ডা লাগলে বা কাশি হলে সাগর কলা খাওয়া যাবে না এটা ঠিক না । কাশি কম বা বেশি হওয়ার সাথে কোন সম্পর্ক নেই ,কলায় থাকা পেকটিন ও মিউসিলেজক কাশি নরম করে বের হতে সাহায্য করে। শ্বাস কষ্ট বা অ্যাজমা আছে এসব রোগী দের ক্ষেত্রে সাগর কলা না খাওয়াই উত্তম।

কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা খাওয়ার উপকারিতা

কাঁঠালি কলার উপকারিতা

অন্যান্য কলার মতই এই কাঁঠালি কলা তবে স্বাদে গুনে একটু ভিন্নতা আছে। কাঁঠালি কলাতে আছে অনেক উপকারিতা। যাদের মাথা ব্যাথা বা বাতের ব্যাথা আছে, তাদের জন্য খুবই উপকারী কাঁঠালি কলা। ইলেক্টোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।  কাঁঠালি কলা খাওয়ার মাধ্যমে অনেক রোগ-অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, যদিও দামে একটু বেশি।

কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে এবং রক্তশূণ্যতা থেকে বাচাতে কাঁঠালি কলা বেশ সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই বলা যায় যে কাঁঠালি কলা খাওয়ার উপকারিতা শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বেশ কার্যকরী।

সবরি ও বিচি কলার উপকারিতা

যেন বিচ বিহিন কলা খেতে খেতে বিচি কলার কথা ভুলেই গিয়েছি আমরা।বিচি কলা দেখলেই যেন গা জিম জিম করে, কিন্তু বিচি কলার গুনের কথা সুনলে চমকে উঠবেন।মনে মনে ভাববেন আজ থেকেই বিচি কলা খাওয়া শুরু করি।বিচি কলা ও সবরি কলাতে অনেক কাজের গুণ রয়েছে।
পাকা বিচি কলায় প্রচুর পরিমাণে শর্করা বিদ্যমান, যা শক্তির অন্যতম উৎস। বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন এ, বি৬, সি এবং ডি এর একটি অসাধারণ উৎস। এটি পটাশিয়ামের একটি অনন্য উৎস, প্রয়োজনিয় পরিমাণ পটাশিয়াম একটি কলা থেকে পাওয়া যায়। পটাশিয়াম পেশি নিয়ন্ত্রণ করে।

কলার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায়। মানসিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় বি৬ এই কলায় থাকে। কলায় প্রচুর লৌহ থাকে, কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস থাকে, যা শরীর স্বাস্থ্ টিস্যু গঠনে কাজ করে।

গাছের সব অংশের ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। ফুল ব্রংকাইটিস, আমাশয় এবং আলসার, রন্ধনকৃত ফুল ডায়বেটিস গাছের কষযুক্ত রক্তক্ষরণ বন্দ করে ।আমাশয় এবং ডায়রিয়া হলে গাছের শিকড় পরিপাকজনিত সমস্যা এবং আমাশয়ে ব্যবহৃত হয়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে কলা

অনেকেই মনে করে থাকেন যে কলা খেলে ওজন বারে তাই ওজন ঠিক রাখতে নিজের খাদ্য তালিকা থেকে কলাকে বাদ রাখেন, কিন্তু কলা খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল। রক্তচাপ ঠিক রাখা থেকে শুরু করে হৃদরোগের সমস্যা দূরে রাখতে সহায়তা করে।

কলার খোসার উপকারিতা

কলার খোসার উপকারিতা

কলার খোসার উপকারিতা

কলার পুষ্টিগুণের কথা অনেকেই জানেন, কিন্তু কলার খোসাও যে কোনো কাজে লাগে তা কি জানেন? কলা খাওয়ার পর কলার খোসা যেখানে-সেখানে ফেলবেন না ফেললে নানা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কলা যেমন উপকারি তেমনি কলার খোসারও রয়েছে নানা গুন। তবে সেই কলা জেনো হয় ফরমালিন বা রাসায়নিক মুক্ত।

প্রাকৃতিক উপায়ে সাদা ঝকঝকে দাঁতের জন্য কলার খোসা ব্যবহার করে উপকার পেতে পারেন, অনেকেই দাঁত থেকে হলদে ভাবটা ওঠানোর চেষ্টা করেন কিন্তু কিছুতেই জেনো কিছু হয় না তবে কলার খোসার ভেতরের দিকটা দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁত মেজে দেখতে পারেন দারুন কাজ করবে।

অনেকেই মুখের ব্রন সমস্যা নিয়ে বিব্রত অবস্থায় পরেন, কলার খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে মুখে ভালো করে ঘষে সারারাত রেখে দিলে ব্রণের সমস্যা দূর হবে, এর মাধ্যমে ব্রন সেরে গেলে আর না হবার সম্ভাবনাই বেশি।

পোকা মাকড় কামড়ালে যদি চুলকাতে থাকে এর জন্য কলার খোসা কাজে লাগাতে পারেন। দ্রুত ব্যথা ও চুলকানি সারতে সহায়তা করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কলা

পেট পরিষ্কার না হলে শরির মন কোণটাই ঠিক থাকে না তখন শরীরে দেখা দেয় নানা সমস্যা। আর এ কারণেই সকালে উঠেই যাতে পেট পরিষ্কার হয় সেই দিকে সবারই খেয়াল রাখা উচিত। যাদের আলসারের মতো সমস্যা রয়েছে, এবং যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন তাদের নিয়ম করে প্রতিদিন ১ টা থেকে ২ টা কলা খাওয়া উচিত।

কাঁচ কলার উপকারিতা

গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কাঁচা কলার সবজি রখাওয়া শুরু করলে দেহের ভেতর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, এর প্রভাবে শরীরে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমে যায়, তেমনি রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

পেটের রোগে কলা

কাঁচা কলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা হজম শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি করার, পাশাপাশি ডাইজেস্টিভ ট্র্যাকের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।এবং বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতির বিশেষ ভূমিকা রাখে কাঁচ কলা, এছাড়াও যারা প্রায়শই গ্যাস-এর সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা কাঁচা কলার সবজি রোজ খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন।

এছাড়াও পাকা কলার বিশেষ আরও কিছু গুণ রয়েছে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে : অনেকেই মনে করেন, কলা খেলে ওজন বাড়ে। আর তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যতালিকা থেকে অনেকেই কলা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু কলা খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। রক্তচাপ নিয়ন্ত করা থেকে হৃদরোগের সমস্যা দূর করে কলা।

এছাড়াও হলুদ পাকা কলাতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের নানা উপকার করে। এছাড়াও পানির চাহিদা পূরণ করে কলা।

তাহলে আজ কলার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করলাম আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

Leave a Reply