কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরা তেলের ব্যবহার বিধি

কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরা তেলের ব্যবহার বিধি

শরীর স্বাস্থ্যের উপকারিতার দিক দিয়ে কালোজিরার উপকারিতা অনেক। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন থেকে শুরু করে শরীরের কোষ ও কলার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কালোজিরা। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের জন্যই না কালোজিরা ত্বকের ও চুলের জন্যও অনেক উপকারি। প্রত্যেকের রান্নাঘরেই কালোজিরা থাকে যা খাবারকে সুবাসিত করে।

এ এমন এক দানা যা দেখতে খুবই ছোট কিন্তু এর ঔষধি শক্তি বা গুনাগুন অনেক, প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে প্রাচীনকাল কাল থেকেই এর ব্যাবহার প্রচলিত হয়ে আসছে।

শুধু তাই নয় কালোজিরা ব্যাবহারে চুলপড়া, অনিদ্রা, মাথা ব্যাথা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা,মুখের সৌন্দর্য রক্ষা, অলসতা ও নিষ্ক্রিয়তা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্ক শক্তি বা স্মরণশক্তি বাড়ায় আরও নানা গুনের সমাহার।

অনেকেই আবার শারীরিক শক্তি বর্ধন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেন বা গোপন রোগের জন্য ভায়াগ্রা খেতেও দ্বিধা বোধ করেন না, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, গোপন রোগের জন্য ভায়াগ্রা নয় এক চামচ কালোজিরাই যথেষ্ট, কারন কালোজিরায় রয়েছে চমৎকার ঔষধি শক্তি বা গুনাগুন।

বিশেষজ্ঞদের রিসার্চ মতে এতে রয়েছে, লৌহ, ফসফরাস, ফসফেট, কার্বো-হাইড্রেট ও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান যা শরীরের জন্য খুবই উপকারি। ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবেও কালোজিরা অনেক কার্যকরী, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক হিসেবেও অনেক ভালো কাজ করে

কালোজিরার উপকারিতা
কালোজিরার উপকারিতা

তাহলে আসুন একে একে আমরা এই মহা ঔষধি গুনে ভরপুর কালোজিরার সমন্ধে কিছু হলেও জানার চেষ্টা করি। আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন।

বাত রোগের উপকার 
গরম পানিতে কালজিরার তেল মিশিয়ে সেবন করলে বাত রোগের উপসম হয় ।

মাথাব্যাথা 
মাথাব্যাথা হলে কপালের দুই পাশ এবং কানে পাশে দিনে তিন-চারবার কালিজিরার তেল মালিশ করুন আশা করি দ্রুত উপশম পাবেন।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি 
মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বারাতে কালজিরার ভুমিকা অনস্বীকার্য। যার দরুন স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে এটি প্রাণশক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে। তাই নিয়মিত কালিজিরা খান।

লিভার ক্যান্সার 
আফলাটক্সিন নামক এক ধরনের বিষ লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী এই কালোজিরা নিয়মিত খেলে লিভার ক্যান্সারের ঝুকি কমে যায়। তাই যারা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত তারা আজ থেকে খাওয়া শুরু করে দিন।

চুলপড়ারোধে কালোজিরা 
কালোজিরা তেল প্রতিনিয়ত ব্যাবহারে ফলে আপনার চুলে পর্যাপ্ত পরিমানে পুষ্টি পাবে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে। আর ভালো ফল পেতে চুলের গোড়ায় এর তেল মালিশ করতে থাকুন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে 
নিয়মিত কালোজিরা বা কালজিরার তেল ব্যাবহারে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে ও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি ও দূর করে। হৃদরোগ নিয়ন্ত্রন করে।

ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চিমটি পরিমাণ কালিজিরা এক গ্লাস পানির সঙ্গে খেয়ে দেখুন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ডায়াবেটিকদের রোগ উপশমে বেশ কাজে লাগে কালিজিরা। ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা গরম ভাতের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ২বার করে খেলে উপকার হবে এবং এক চা-চামচ কালোজিরার তেল ও এক কাপ রং চা নিয়মিত সেবন করলে ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকবে ।

ব্লাড প্রেসারনিয়ন্ত্রনে রাখতে 
কালোজিরা তেল এর উপকারিতা বলে শেষ করার মতো নয় নিয়মিত সকালে সমস্ত শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্যেরতাপে কমপক্ষে আধাঘন্টা অবস্থান করতে হবে এবং এক চা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণমধুসহ প্রতি সপ্তাহে ২/৩ দিন খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখে।

কালোজিরার দাম

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা যে কোন ভাবেই কালোজিরা খেতে পারি যেমন আস্ত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারি অথবা গুড়ো করেও খেতে পারি, আবার কালোজিরার তেল বানিয়েও খাওয়া যায় কেউবা আবার ভর্তা বানিয়েও খায়, আবার কেউ কেউ মধুর সাথে মিশয়েও খেয়ে থাকেন। এই কালোজিরা একেভাবে খেলে একেক উপকারিতা পাওয়া যায় চলুন তাহলে কোন রোগের জন্য কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধিকরণে কালোজিরা
এক চামচ কমলার রস অথবা পুদিনা পাতার রস অথবা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার নিয়মিত খেতে হবে, এতে করে আপনার দুশ্চিন্ত দূর করতে সাহায্য করবে। এছারাও মেধা বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে। কালোজিরা নিজেই এমন একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি অনেক গুন বাড়িয়ে তুলে।

সর্দি সারাতে কালোজিরা
এক চা চামচ মধু অথবা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার খেতে হবে এবং ঘারে ও মাথায় মালিশ করতে হবে। এছারা দুই চা-চামচ তুলসী পাতার রসের সাথে এক চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে খেলে জ্বর, সর্দি-কাশ্‌ ব্যথা দূর হবে। আর দ্রুত ফলাফল পেতে পিঠে ও বুকে কালিজিরার তেল মালিশ করুন।

মাথা ব্যাথা নিরাময়ে কালোজিরা
আধা চা চামচ কালোজিরার তেল হাঁতে নিয়ে মাথায় ভালো ভাবে লাগাতে হবে এবং সেই সাথে এক চা চামচ মধু ও সমপরিমাণ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার করে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ খেলে মাথা ব্যথা উপশম হবে।

হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় কালোজিরা
এক কাপ দুধের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার গুড়ো মিশিয়ে রোজ ২ বার করে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ খেলে হার্টের সমস্যা সমাধানে উপকার আসবে।

বাতের ব্যাথা সারাতে কালোজিরা
যে স্থানে বাতের বেথা হয় সেখানে ভালো করে পরিস্কার করে ধুয়ে কালোজিরার তেল মালিশ করলে উপকার হবে, সেই সাথে এক চা চামচ মধুর সাথে সমপরিমাণ কাঁচা হলুদের রস ও এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক ৩ বার ২ থেকে ৩ সপ্তাহ খেলে বাতের ব্যাথা সমাধানে উপকৃত হবেন।

ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রনে কালোজিরা
রোজ সকালে একটি রসুনের কোয়া চিবিয়ে খেয়ে পুরো শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে বাহিরে সূর্যের তাপে মিনিমাম আধাঘন্টা বসে থাকলে এবং এক চা চামচ মধু ও সমপরিমাণ কালোজিরার তেল সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার খেলে রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাছারা কালোজিরা বা কালোজিরার তেল ডায়াবেটিস বা বহুমুত্র রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রন রেখে নিম্ন রক্তচাপকে বৃদ্ধি করে এবং উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রন রাখতে সাহায্য করে।

পাইলস নিরাময়ে কালোজিরা
এক চা চামচ তিলের তেল ও সমপরিমাণ মাখন এর সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে রোজ সকালে খালি পেটে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।

শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানি রোগে কালোজিরা
শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা বা হাঁপানী রোগীদের জন্য কালোজিরা অনেক উপকারি, তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কালোজিরার ভর্তা রাখুন।
গরম ভাতের সাথে এই ভর্তা যেমন সুস্বাদু তেমনি উপকার।

যৌন সমস্যা সমাধানে কালোজিরা
নারী পুরুষ উভয়েরই যৌন ক্ষমতা বারাতে কালোজিরার ভুমিকা অপরিসীম, সেই সাথে যৌন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রোজ খাবারের সাথে কালোজিরা খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা অনেক গুনে বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। এক চা চামচ জাইতুন তেল সমপরিমাণ মাখন ও কালোজিরার তেল এবং সমপরিমাণ মধু দৈনিক ৩ বার ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ খেলে অনেক উপকার পাবেন।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা
যাদের ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন সকালে এক চিমটি পরিমান কালোজিরা হাঁতে নিয়ে এক গ্লাস পানি দিয়ে চিবিয়ে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক পরিমানে থাকবে যা আপনার জন্য খুবই জরুরি। এছার গরম ভাতের সাথে এবং রঙ চায়ের সাথেও রোজ দুইবার খেতে পারেন।

অনিয়মিত মাসিক সমস্যায় কালোজিরা
এক কাপ আতপ চাল ধোয়া পানি বা এক কাপ কাঁচা হলুদের রসের সাথে এক চা চামচ চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে রোজ তিনবার খেয়ে দেখুন এর ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পাবেন।

শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে কালোজিরা
দুই বছরের অধিক বয়সী শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়। শিশুর স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের সুস্থতা বৃদ্ধিতেও অনেক কার্যকরী। তবে কালোজিরার তেল দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের না খাওয়ানোই উচিৎ।

বুকের দুধ বৃদ্ধিতে কালোজিরা
আমরা অনেকেই জানি যে যে মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ আসে না তাদের জন্য কালোজিরা মহৌষধ হিসেবেই পরিচিত রয়েছে, মায়েরা রোজ রাতে শোবার আগে ৫-১০ গ্রাম কালিজিরা মিহি করে খাটি গরুর দুধের সাথে নিয়মিত খেতে থাকুন। এর ফলাফল হিসেবে মাত্র ১০-১৫ দিনের মধ্যেই দুধের মাত্রা বেড়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্‌। এছারাও গরম ভাতের সাথে ভর্তা করেও খেতে পারেন, এক চা চামচ মধু ও সমপরিমাণ কালোজিরার তেল রোজ তিনবার খেলে নিজেই অবাক হবেন এর কার্যকারিতা দেখে।

লিভারের বিভিন্ন সমস্যায় কালোজিরা
এক চা চামচ কালোজিরার তেলের সাথে এক গ্লাস ত্রিফলার শরবত মিশিয়ে রোজ ৩ বার করে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ খেলে লিভারের সমস্যা দূরীকরণ হবে। এবং আফলাটক্সিন নামক এক ধরনের বিষ যা লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী ঐ ধরনের বিষকে ধ্বংস করতেও সাহায্য করে।

চুল পড়া সমস্যায় কালোজিরা
নিয়মিত কালোজিরা খেলে চুলের গোরায় পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে যার ফলে চুল পরা বন্ধ হবে এবং দ্রুত ফল পেতে মাথায় বা চুলের গোরায় এই তেল লাগাতে পারেন।

হজমের সমস্যায কালোজিরা
অনেকেই হজম সমস্যায় ভুগে থাকেন, আবার অনেকে পেট ফাপা সমস্যায়ও ভুগে থাকেন এই সব সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এই কালোজিরায়। এর জন্য এক চা চামচ কালোজিরা বেটে পানির সাথে খেতে পারেন দিনে দুই তিন বার এভাবে এক মাসের মধ্যেই এর ফলাফল পাবেন এবং হজম সক্তিও বেড়ে যাবে।

কালজিরার অন্যান্য গুণ

প্যারালাইসীস বা পক্ষাঘাত রোগে কালোজিরার তৈল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। শুলবেদনা ও প্রসূতি রোগে কালোজিরা অত্যধিক উপকারী। ব্রুনের জন্যও এটি উত্তম ঔষধ। কালোজিরা নিয়মিত খেলে মূত্রথলির পাথর ও জন্ডিস থেকে আরোগ্য লাভ হয় ।

নিয়মিত কালোজিরা ব্যাবহারে অধিক ঋতুস্রাব ও অতিরিক্ত পেশাব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কালোজিরা রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

আপনার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ রাখতে ও সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি সাধন করতে নিয়মিত কালোজিরা সেবন করুণ। ভাত, তরকারী ইত্যাদির সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খান রোগ থেকে দূরে থাকুন।

কালোজিরার ভর্তা

যেমন রয়েছে উপকারিতা তেমন খেতেও মজাদার, বাঙ্গালীর খাবারের তালিকায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা আইটেম আর তা হলো ভর্তা, গরম ভাতের সাথে ভর্তা হলে যেন আর কিছু লাগেই না। প্রতিদিনের তরকারি বা সবজি খেতে খেতে যে একটা এক ঘেয়েমি চলে আসে তা দূর করতেও ভর্তার তুলনা নেই।

এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ভর্তার নাম যা না বললেই নয় যেমন বেগুন ভর্তা, আলুর ভর্তা, ও কালোজিরার ভর্তা। নানা গুনে সমন্বিত কালোজিরার ভর্তা কিভাবে বানাতে হয় তা আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

চার জনের পরিবেশনার জন্য যা যা লাগবে তা নিম্নে দেয়া হলোঃ

ভর্তার উপকরন
৪ টেবিল চামচ কালোজিরা
৬-৭ কোয়া রসুন
কাঁচা মরিচ ৪ টি অথবা ঝাল অনুযায়ী
স্বাদমতো লবন
২- চা চামচ সরিষার তেল

প্রথমে কালোজিরা ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন তারপর হাল্কা আচে টেলে নিন যেন ভাজা বেশি না হয়ে যায় কারন ভাজা বেশি হলে স্বাদ তেতো লাগতে পারে।
এরপর সরিষার তেলে কাচা মরিচ ও রসুন হাল্কা আচে টেলে নিন, রসুন ও মরিচের গায়ে হাল্কা বাদামি কালার আসলেই নামিয়ে নিন।

এখন এই সমস্ত উপকরন একসাথে করে শিল পাটায় বেটে স্বাদ মতো লবন দিয়ে ভর্তা তৈরি করতে পারেন, শিল পাটা না থাকলে প্রথমে কালোজিরা ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে নিয়ে তারপর ঐ গুড়ো করা কালোজিরার সাথে সব কিছু ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে নিলেই হয়ে যাবে।

এখন গরম ভাত বা ভুনা খিচুরির সাথে পরিবেশনের পালা , কেমন লাগলো আজকের ভর্তা ? কমেন্ট জানাতে ভুলবেন না ।

কালোজিরার ভর্তা
কালোজিরার ভর্তা

কালোজিরার দাম

কালোজিরার দাম একেক জায়গায় একেক রকম হতে পারে, আবার বেশি কম কিনলেও এর দাম কম বেশি হতে পারে, যেমন আপনি যদি অনলাইন থেকে কোন ব্র্যান্ডের ১০০ গ্রাম কালোজিরা কিনেন এর দাম পরবে ৭৪ টাকার মতো, তারমানে এক কেজির দাম পরবে (৭৪/১০০) * ১০০০ =৭৪০ টাকা, কিন্তু আপনি যদি আপনার বাড়ির সামনের কোন মুদি দোকান থেকে ১ কেজি কালোজিরা কিনেন তার দাম পরবে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা প্রতি কেজি, আবার যদি আপনি পাইকারি মন হিসেবে কিনেন তার দাম বর্তমান বাজার অনুযায়ী ১০,০০০ থেকে ১১,০০০ টাকা প্রতি মন পরবে।

কালোজিরা তেলের দাম

কালোজিরা তেলের দামেরও কিছু ভেরিয়েশন থাকতে পারে বা কম বেশি হতে পারে তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যে দামের কালোজিরার তেল সচারাচর পাওয়া যায় তা দাম হলো ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে প্রতি লিটার তবে কম নিলে যেমন ১০০ এম এল এর দাম ১৮০ টাকা থেকে ২২০ টাকার মতো।

কালোজিরার তেল বানানোর উপায়

এই ভিডিও টি দেখলে আপনারা মোটামোটি একটা আইডিয়া পাবেন যে কিভাবে কালোজিরার তেল বানানো হয়।

আসল কালোজিরার তেল চেনার উপায়

আসল কালোজিরা তেল পরীক্ষা করতে আমাদের যা যা দরকার
১- একটা গ্লাস বা মগ
২- একটা চা চামচ
৩- কালোজিরা তেল

প্রথমেই ওই গ্লাস বা মগটিতে এক চামচ কালোজিরা তেল নিন
তারপর ওই পাত্রটির অর্ধেক পানি নিয়ে আস্তে আস্তে কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করুন, যদি দেখেন যে পানির রঙের পরিবর্তন হয়েছে তাহলে বুঝবেন এটা নকল বা ভেজাল তেল, আর যদি অনেক ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পরেও দেখেন যে পানির রঙের কোনো পরিবর্তন হয়নি তাহলেই বুঝবেন এটা খাঁটি বা আসল কালোজিরা তেল।

কালোজিরার ক্ষতিকর দিক বা কালোজিরার অপকারিতা

কালোজিরার অপকারিতা বা কালোজিরার ক্ষতিকর দিক তেমন একটা নেই তবে গর্ভবস্থায় ও দুই বছরের বাচ্চাদের কালোজিরার তেল না খাওয়ানোই ভালো তবে বাহিরে ব্যবহার করা যেতে পারে।

তাহলে আজ আমরা কালোজিরার উপকারিতা কি কি ও কালোজিরা তেলের ব্যাবহার কিছুটা জানার চেষ্টা করলাম আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে , কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

FAQs

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম কি ?

আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা যে কোন ভাবেই কালোজিরা খেতে পারি যেমন আস্ত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারি অথবা গুড়ো করেও খেতে পারি, আবার কালোজিরার তেল বানিয়েও খাওয়া যায় কেউবা আবার ভর্তা বানিয়েও খায়, আবার কেউ কেউ মধুর সাথে মিশয়েও খেয়ে থাকেন।

যৌন সমস্যা সমাধানে কালোজিরা কি কাজ করে ?

নারী পুরুষ উভয়েরই যৌন ক্ষমতা বারাতে কালোজিরার ভুমিকা অপরিসীম, সেই সাথে যৌন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রোজ খাবারের সাথে কালোজিরা খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা অনেক গুনে বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। এক চা চামচ জাইতুন তেল সমপরিমাণ মাখন ও কালোজিরার তেল এবং সমপরিমাণ মধু দৈনিক ৩ বার ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ খেলে অনেক উপকার পাবেন।

3 Comments

  1. Admin July 27, 2021
  2. The Bangla King February 24, 2023
  3. হাসির গল্প June 14, 2023
  4. হাসির গল্প June 14, 2023

Leave a Reply