বীজগণিতের সূত্র সমূহ সকল সূত্র একসাথে

আসসালামু আলাইকুম, গণিতের একটি বিশেষ শাখা হলো বীজগণিত। বীজগণিত ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির জন্য বাধ্যতামূলক একটি টপিক, যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই জানতে হয়। এছাড়াও, পড়াশোনায় পরবর্তী ধাপেও বীজগণিতের ব্যবহার প্রতীয়মান। প্রাত্যাহিক জীবনেও বীজগণিতের ব্যবহার রয়েছে। 

আজ এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বীজগণিতের সূত্রাবলী নিয়েই আলোচনা করব। আজ আপনাদেরকে জানাবো বীজগণিত কি, এর জনক কে এবং বীজগণিতের সূত্র সমূহ bijgonit sutro সম্পর্কে। 

বীজগণিতের জনক কে?

মধ্যযুগীয় একজন গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ ও ভূগোলবিদ, যিনি বীজগণিতকে গণিতের বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন একটি শাখা হিসেবে রুপ দিয়েছেন তিনি হলেন আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মূসা আল খোয়ারিজমি। তাঁর বীজগণিত সম্পর্কিত লেখা বই “আল জাবর ওয়াল মুকাবলা ” হতে বীজগণিতের ইংরেজি ‘আ্যলজেবরা’ শব্দের উৎপত্তি। এ বইয়ে তিনি বীজগণিতের অনেক বিষয়বস্তু ও বীজগণিতের সূত্রসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

বীজগণিতকে সবার সামনে গুরুত্বপূর্ণভাবে তুলে ধরায় আল খোয়ারিজমিকেই বীজগণিতের জনক ধরা হয়।

বীজগণিতের সূত্র সমূহ

বীজগণিতের সূত্র সমূহ ও বীজগণিত কি? 

বীজগণিত হলো পূর্ণ সংখ্যার ধ্রুবক, চলক এবং এদের মধ্যে শৃঙ্খল কার্যবলির সমষ্টি। সহজ করে বললে – বীজগণিত হলো গাণিতিক সমীকরণের লুকায়িত মান প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরা। 

পাটিগণিতে হিসেব করার সময় আমরা প্রতীক হিসেবে ১,২,৩… ইত্যাদি ব্যবহার করি। কিন্তু বীজগণিতে প্রতীক হিসেবে a,b,c,d,….. ইত্যাদি ব্যবহার করি।

বীজগণিতের চলক ব্যবহার করে যেকোনো গাণিতিক সম্পর্ককে মাত্র কয়েক লাইনে লেখা সম্ভব। এমনকি এক লাইনে লেখাও সম্ভব।

যেমন: একটি প্রতিষ্ঠানে কিছু সংখ্যক পুরুষ কর্মী কাজ করে যাদের দ্বিগুনের চেয়েও ৪০ জন বেশি মেয়ে কর্মী কাজ করে। আর পুরুষ কর্মীদের মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবক, যা মোট কর্মীর ১/১১ অংশ।

পুরুষ কর্মীর সংখ্যা X চলক ধরে খুব সহজেই প্রতিষ্ঠানের মোট কর্মী, মহিলা কর্মী ও যুবকদের সংখ্যা জানা যায়। এক্ষেত্রে নিচের সম্পর্কটি ব্যবহার করা যেতে পারে:

X+(2X+40)=11(X÷3)

আরো পড়ুন: ইংরেজি শেখার সহজ উপায় ১৪টি টিপস

বর্গ নির্ণয়ের সূত্র

বীজগণিতের বর্গ নির্ণয়ের সূত্র

গাণিতিক বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান করতে বর্গ নির্ণয়ের সূত্র ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও একাডেমিক পড়াশোনায়ও এসব সূত্রের প্রয়োজন হয়।

নিচে বীজগণিতের বর্গ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র ও অনুসিদ্ধান্ত সমূহ দেওয়া হলো।

  • (a+b)2 = a2 + 2ab+ b2
  • (a-b)2 = a2 – 2ab + b
  • a2-b2 = (a+b) (a-b)
  • (a+b+c)2 = a2 + b2 + c2 + 2ab + 2bc + 2ca

অনুসিদ্ধান্ত:

  • (a+b)2 =(a-b)2 + 4ab
  • (a-b)2 = (a+b)2 – 4ab
  • a2+b2= (a+b)2 – 2ab

          = (a-b)2 + 2ab

  • 4ab = (a+b)2 – (a-b)2
  • 2(a2 + b2) = ( a+b)2 + (a-b)2
  • ab =
ঘন নির্ণয়ের সূত্র

বীজগণিতের ঘন নির্ণয়ের সূত্র

বীজগণিতের সূত্রসমূহ এর মধ্যে ঘন নির্ণয়ের সূত্র অন্যতম। এগুলো বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক বস্তুর ক্ষেত্রফল, আয়তন পরিমাপ, অজানা দৈর্ঘ্যের মান নির্ণয় কর‍তে ব্যবহৃত হয়।

নিচের অংশে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে অতিপ্রয়োজনীয় কিছু ঘন নির্ণয়ের সূত্র ও অনুসিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।

  • (a+b)3 = a3 +3a2b +3ab2 + b3

            = a3 +b3+ 3ab(a+b)

  • (a-b)3 = a3 – 3a2b +3ab2 – b3

          = a3 -b3 -3ab (a-b)

  • a3+b3+c3= (a+b+c)(a2+b2+c2 -ab-bc-ca) +3abc
  • a3+b3 = (a+b) (a2-ab+b2)
  • a3-b3 = (a-b)( a2+ab+b2)

অনুসিদ্ধান্ত:

  • a3+b3 = (a+b)3 -3ab(a+b)
  • a3-b3 = (a-b)3 +3ab(a-b)

আরো পড়ুন: পড়াশোনা করার নিয়ম ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

বীজগণিতের সূচকের সূত্রাবলী

বড় কোনো সংখ্যাকে ছোট করে লিখতে গণিতে সূচক ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বড় সংখ্যার মধ্যে গাণিতিক সম্পর্ককে অল্প কথায় লিখতে সূচকের সূত্র ব্যবহার করতে হয়।

নিচে গণিতের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূচকের সূত্র দেওয়া হলো। এগুলো অবশ্যই আপনার গাণিতিক সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে ও সময় বাঁচাবে।

  • am×an = am+n
  • am÷an= am-n
  • (am)n= amn
  • an= 1/a-n
  • (ab)n= anbn
  • (a/b)n=an/bn
  • a0=1
  • a-1= 1/a
  • a1=1

বীজগণিতের লগারিদমের সূত্র সমূহ

বাস্তব জীবনের নানান জটিল অবস্থা যেগুলো মানুষের মেধা দিয়ে সমাধান করতে বেশ বেগ পোহাতে হয় ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার সেগুলোর সহজ সমাধান দেওয়া যায় লগারিদমের এসব সূত্র ব্যবহার করে।

নিচের অংশে লগারিদমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রসমূহ উল্লেখ করা হলো। চাইলে এটা আপনার ফোনে সেভ করে রাখতেও পারেন।

লগারিদমের সূত্র

ইতিকথা

ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে গণিতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সকল পর্যায়েই বীজগণিতের সূত্রসমূহ প্রয়োজন হবে।

এছাড়াও প্রোগ্রামিং ও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতেও এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীদের জন্য এসব সূত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া যারা ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে তাদের তো প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রয়োজনের সময় কোনো একটি সূত্র মাথায় আসে না। আবার হাতের কাছে বই-খাতা না থাকায় পড়তে হয় ঝামেলায়।

আপনাদের এই অসুবিধার কথা ভেবেই আজকের পোস্টটি সাঁজিয়েছি। এখানে বীজগণিতের গুরুত্বপূর্ণ সূত্রসমূহ একসাথে করার চেষ্টা করেছি। আশা করবো এটি থেকে উপকৃত হবেন।

Leave a Reply