Nagad agent registration 2023 – নগদ এজেন্ট একাউন্ট করার নিয়ম

২০২৩ সালের আজকের দুনিয়ায় যদি মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে কথা বলি তাহলে নগদের কথা বাদ দিয়ে বলা যাবে না। কারন নগদ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। ২০১৯ সালে তাদের প্রথম যাত্রা শুরু করলেও এই ৪-৫ বছরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে গেছে। প্রতিদিন বা প্রতি মুহূর্তে হুহু করে বাড়চ্ছে নগদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা।  তাদের দেওয়া তথ্যমতে প্রতিদিন নগদ অ্যাপের মাধ্যমে ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। তাই আজকের আয়োজনে থাকচ্ছে নগদ এজেন্ট একাউন্ট কি nagad agent registration নগদ এজেন্ট খোলার নিয়ম, কমিশন আয়, সুবিধা, অসুবিধা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত;

নগদ এজেন্ট কি? What is nagad agent account

আমরা জানি নগদ ডাক বাংলার একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। আর নগদ এজেন্ট এমন একটি সেবা যার মাধ্যমে নগদ এবং গ্রাহকদের মধ্যে একটি বন্ধন ঘরে তুলে। অর্থ্যাৎ, নগদ গ্রাহকরা তাদের ক্যাশ আউট,ক্যাশ ইন নগদ এজেন্টকে করবে আর এজেন্ট এর মাধ্যমে কিছুটা প্রফিট নিবে।

Nagad agent registration
Nagad agent registration

নগদ এজেন্ট একাউন্ট করতে কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে

Nagad agent registration করতে বা নগদ এজেন্ট একাউন্ট করতে আপনার প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্রের দরকার পড়বে। বিশেষ করে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানতো থাকতেই হবে। নিচে কিছু ডকুমেন্ট দেওয়া হলো যা নগদ একাউন্ট করতে প্রয়োজন পড়বে;

  • একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান;
  • জাতীয় পরিচয়পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট এর কপি;
  • ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি;
  • আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স;
  • টিন সার্টিফিকেট এর কপি;
  • একটি সিম নাম্বার;

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান

বিকাশ এজেন্টের জন্য প্রথম আপনার একটি দোকান থাকতে হবে। কারন এজেন্ট নেওয়ার মূল্য উদ্দেশ্যে হলো ব্যবসা করা। আর এই ব্যবসার জন্য আপনার একটি দোকান থাকা প্রথম শর্ত।

জাতীয় পরিচয়পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট এর কপি

যেহেতু এটা লেনদেনের বিষয় তাই এখানে আবেদনকারীর নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র/ডাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট লাগবে। আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে নিজের যে কোনো একটি দিয়ে নগদ এজেন্ট খুলতে পারবেন।

৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

বিকাশ এজেন্টের জন্যই আবেদন করতে আবেদনকারীর রঙ্গিন ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন পড়বে।

ট্রেড লাইসেন্স

ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনি কোনোভাবেই নগদ এজেন্ট নিতে পারবেন না। নগদ এজেন্ট মূলত ব্যবসা দেখেই দেয়। এজন্য আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স লাগবে। আপনার যদি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স না থাকে তাহলে নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদের/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন থেকে আগে লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।

টিন সার্টিফিকেট

Tax Identification Number বা টিন সার্টিফিকেট প্রায় অধিকাংশ ব্যবসাতে প্রয়োজন পড়ে। আপনি অনলাইন থেকে টিন সার্টিফিকেট আবেদন করে নিতে পারবেন।

সিম-কার্ড

নগদ এজেন্টর প্রধান শর্তই হলো সিম। কারন আপনার সকল লেনদেন করতে একটা সিমের প্রয়োজন পড়বে। আর এই সিম নাম্বারটি আপনার ব্যক্তিগত নাম্বার হতে হবে। কারন এই সিমের নাম্বারই কিন্তু আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট নাম্বার হবে।

নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম – nagad agent registration

নগদ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে, নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এনাইডি,৩ কপি বের সাইজের ছবি, ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট, একটি সিম নাম্বার লাগবে।

দুই উপায়ে নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলা যায়;

  • নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে
  • নগদ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে

বিকাশে বা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংগুলোর সময় ঘরে বসেই এজেন্ট একাউন্ট খোলা গেলেও নগদের বেলায় সেটা সম্ভব নয়। নগদ এজেন্ট খুলতে হলে নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস বা নগদ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে হবে।

আরো পড়ুন: Nagad account open – নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম

নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনার নিকটস্থ নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস গিয়ে এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন। উপরোক্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে নগদ এজেন্ট  এর জন্যই আবেদন করতে পারবেন।

নগদ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এজেন্ট একাউন্ট খোলা

নগদ সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ দেশের প্রায় সব স্থানেই যায়। এমনকি আপনার এলাকায়ও নগদ বিক্রয় প্রতিনিধি বা এসআর এর সাথে নগদ এজেন্টের লেনদেন দেখে থাকবেন।

আপনি উপরোক্ত ডকুমেন্ট নিয়ে নগদ প্রতিনিধির মাধ্যমেও নগদ একাউন্ট খুলতে পারবেন।

নগদ এজেন্ট ব্যবসার জন্য কত টাকা লাগে

আপনার ব্যবসার অবস্থান অনুযায়ী নগদ এজেন্টের ব্যবসার তারতম্য ঘটে। কারন শহরে যদি ব্যবসা করেন তাহলে লাগবে এক এবং গ্রামে ব্যবসা করলে লাগবে আরেক।

আপনি যদি শহরে নগদ এজেন্টের ব্যবসা করেন তাহলে আপনার কমপক্ষে ১-২ লাখ টাকা লাগবে। কারন শহরে অধিক জনসংখ্যা বসবাসের পাশাপাশি অনেক জনবহুল ও থাকে। আর অধিক জনসংখ্যা এবং জনবহুল হওয়ার কারনে শহরে চাহিদা বেশি। তাই এখানে চাকরি করতে হলে কমপক্ষে তো ১-২ লাখ টাকা নিয়ে নামতেই হবে।

আপনি যদি গ্রামে ব্যবসা করেন তাহলে আপনার টাকা কিছুটা কম লাগবে। গ্রামে ব্যবসা করতে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা হলেই হয়ে যায়। পরবর্তীে ব্যবসার প্রসার ঘটলে আপনার পুঁজি আরও বাড়াতে পারেন।

নগদ এজেন্ট কমিশন কত

নগদ এজেন্ট কমিশন কত ?

নগদ এজেন্ট হয়ে নগদে লেনদেন করার মাধ্যমে এখান থেকে কিছু কমিশন পাবেন। সাধারণত নগদ এজেন্টকারীরা লেনদেনের মাধ্যমে হাজারে ৪ টাকা ১০ পয়সা পায।

তবে নগদ কমিশন মূলত লেনদেনের উপরে নির্ভর করে। আপনার লেনদেনের পরিমাণ যদি বেশি হয় বিশেষ করে সেন্ড মানি বেশি হলে আপনি দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও নগদ রিচার্জের বিষয়টা তো রয়েছে। নগদ রিচার্জে অনেক ক্যাশব্যাক রয়েছে। যেখান থেকেও দৈনিক কমপক্ষে ৪০০-৫০০ ইনকাম করতে পারবেন।

নগদ এজেন্টের সুবিধা

ব্যবসায়ি এবং উদ্যোক্তাদের জন্য নগদ এজেন্ট খুবই লাভজনক একটি উপায়। আপনি যে কোনো ব্যবসার সাথে বাড়তি টাকা ইনকামের জন্য নগদ এজেন্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। নিচে আমি নগদ এজেন্টের কিছু সুবিধা দিলাম;

  • ছোট বড় যে কোনো ব্যবসার সাথে এই ব্যবসা করা যায়।
  • আপনার বাজেট যদি কমও হয় তারপরেও এই ব্যবসা করতে পারবেন।
  • আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে কাস্টমারকে সেবা দিতে পারবেন।
  • এজেন্ট হিসেবে আপনি এখান থেকে বাড়তি মুনাফা পাবেন।
  •  অর্থ লেনদেনের পাশাপাশি আপনি নগদে মোবাইল রিচার্জ,বিদ্যুৎ বিল,গ্যাস বিল,পানি বিল ইত্যাদি দিতে পারবেন।

নগদ এজেন্ট একাউন্টের অসুবিধা

নগদে এজেন্ট একাউন্টে সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিচে দেওয়া হলো,

  • নগদ এজেন্ট বা ব্যবসায়িরা ছাড়া যে কেউ এই একাউন্ট খুলতে পারে না।
  • নগদ এজেন্টের মাধ্যমে শুধু পার্সোনাল একাউন্টেই লেনদেন করতে পারবেন। কিন্তু নগদ এজেন্ট থেকে এজেন্টে লেনদেন করতে পারবেন না।
  • হঠাৎ করে যদি আপনার টাকার প্রয়োজন হয় আপনি তুলতে পারবেন না। নগদে এজেন্ট থেকে টাকা তুলতে সরাসরি ব্যাংকে যেতে হয়।

আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পোস্টঃ

পরিশেষে

আজকের আয়োজনে আমরা কিভাবে নগদ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হয়। nagad agent registration এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করা যায় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নগদ এজেন্ট একাউন্ট কিভাবে খোলা যায় এবং খুঁটিনাটি সকল বিষয় বুঝতে পেরেছেন। এরপরও যদি আপনার কোনো কিছু অস্পষ্ট থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জননাতে পারেন।

FAQ- প্রশ্নোত্তর

নগদ কত সালে তাদের প্রথম যাত্রা শুর করে?

উত্তরঃ ২০১৯ সালে।

নগদ এজেন্ট কি?

উত্তরঃ নগদ এজেন্ট এমন একটি সেবা যার মাধ্যমে নগদ এবং গ্রাহকদের মধ্যে একটি বন্ধন ঘরে তুলে।

নগদ এজেন্ট করতে নিচের কোন ডকুমেন্টটি লাগবে?

উত্তরঃ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান।

কয়টি উপায়ে নগদ এজেন্ট করতে হয়?

উত্তরঃ ২টি

শহরে নগদ এজেন্টের ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে?

উত্তরঃ ১-২ লাখ টাকা।

গ্রামে নগদ এজেন্ট করতে কত টাকা লাগে?

উত্তরঃ ৫০-৬০ হাজার টাকা।

নগদ এজেন্টের মাধ্যমে লেনদেন করে হাজারে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায়?

উত্তরঃ ৪ টাকা ১০ পয়সা।

Leave a Reply