আজকের মূল আলোচনার বিষয় বস্তু হলো Nagad merchant account opening সম্পর্কে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং খাতে বেশ পরিবর্তন এসেছে। ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলো এদেশের মানুষের জনজীবন উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। একটা সময় টাকা লেনদেনের জন্য ব্যাংকে ব্যাংকে ঘুরতে হতো। কিন্তু আধুনিক মোবাইল ব্যাংকিং গুলোর কারনে ঘরে বসে দেশ থেকে বিদেশে সব স্থানে লেনদেন করা সহজ হয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশে যে সকল মোবাইল খাতগুলো ব্যাংকিং সেবা কে উন্নতির শিখরে নিয়ে গিয়েছে তার মধ্যে নগদ অন্যতম।২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করা এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠানটি সবার কাছে খুব গ্রহণ যোগ্যতা পেয়েছে।
অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর থেকে নগদের মান অনেক উন্নত। এছাড়াও নগদ বাংলাদেশের সব থেকে কম রেটে ক্যাশ আউট চার্জ কাটে। আজকের আয়োজনে থাকছে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং নগদের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।
বাংলাদেশে প্রায় সবগুলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবাই ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ সুবিধার একাউন্ট মার্চেন্ট একাউন্ট রাখে। ঠিক একইভাবে নগদও ব্যবসায়িদের জন্য মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা রেখেছে। এই সেবাটির মাধ্যমে ব্যবসায়িরা খুব সহজেই ক্রেতার থেকে লেনদেনের সুবিধা পায়।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট হলো ব্যবসায়িকদের জন্য একটি ডিজিটাল লেনদেন সেবা। এর মাধ্যমে ক্রেতা কিছু কিনে বিক্রেতাকে সরাসরি টাকা না দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে নগদ অ্যাপ এর সাহায্যে পে করবে।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা
আপনার মনে একটি প্রশ্নো ঘুরপাক খেতে পারে আর সেটি হলো আমার তো নগদ পার্সোনাল একাউন্ট আছে তাহলে নগদে মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার কি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?- আপনি যদি ব্যবসায়িক হন তাহলে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। কারন নগদ পার্সোনাল একাউন্টের থেকে নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে বেশি সুবিধা। বিশেষ করে এটা ব্যবসায়িদের জন্য অনেক লাভজনক। নিচে আমি নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা দিলাম;
- আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যদি মার্চেন্ট একাউন্ট থাকে তাহলে ক্রেতা তার সেবা গ্রহণ করে আপনাকে সরাসরি টাকা না দিয়ে নগদ অ্যাপের মাধ্যমে পে করবে।
- আপনার যদি ইতিমধ্যেই নগদ পার্সোনাল একাউন্ট খোলা থাকে, তারপরেও আপনি এক আইডি কার্ড এবং একই নাম্বারে ব্যবহার করে মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- সাধারণত পার্সোনাল একাউন্টগুলোতে লেনদেনের একটি সীমা থাকলেও মার্চেন্ট একাউন্টের বেলায় সেই সীমা থাকে না। অর্থ্যাৎ, আপনি যত খুশি তত লেনদেন করতে পারবেন এর কোনো সীমা নেই।
- এছাড়াও নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ কমের পাশাপাশি শপিং এর টাকা পে করার সাথে সাথে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই বিশেষ ছাড়ও পেয়ে যায়।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে আমাদের কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন পড়বে। নিচে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো দেওয়া হলোঃ
- যিনি মার্চেন্ট একাউন্ট খুলবে তার জাতীয় পরিচয়পত্র/ডাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট।
- দোকানের সিল বা লাইসেন্স।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- একটি মোবাইল নাম্বার।
- ট্রেড লাইসেন্স।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম- Nagad merchant account opening
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা একদম সোজ। আপনি ঘরে বসেই ৫ মিনিটের মধ্যে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে ফেলতে পারবেন।
- নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে হবে। নগদ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম এই লিংকে।
- লক্ষ্য রাখবেন পার্সোনাল একাউন্ট খোলার মাজ পথে অন্যান্য ডকুমেন্ট শিরোনামে একটি পেইজ সামনে আসবে। পেইজে দুটি অপশন দেখতে পারবেন একটি হচ্ছে সাধারণ একাউন্ট এবং আরেকটি মার্চেন্ট একাউন্ট।
- আপনি দুটি অপশনের মধ্য নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে ক্লিক করবেন। ক্লিক করার পর আপনার সামনে একটি ফরম চলে আসবে। আপনাকে সকল তথ্য দিয়ে ফরমটি পূরণ করতে হবে।
- এরপর আপনার ট্রেড লাইসেন্স বা অন্য কাগজপত্রের ছবি আপলোড দিতে হবে।
- আপলোড করার পরই আপনার মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে। এখন থেকে আপনি মার্চেন্ট একাউন্টের সব সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের কিছু অসুবিধা
মার্চেন্ট একাউন্টে সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যে কোনো মোবাইল ব্যাংকিং এর বেলায় লেনদেনের ক্ষেত্রে পার্সোনাল বা রিটেইলে লেনদেন করতে হবে। অর্থ্যা, কোনো এজেন্টের মাধ্যমে নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন না।
হঠাৎ করে আপনার টাকার প্রয়োজন হলে মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে সোজা ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলতে হবে।
আরো পড়ুন: Nagad account open – নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ কত
বাংলাদেশ যেই কয়টি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা আছে তার মধ্যে নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের ক্যাশ আউট চার্জ সব থেকে কম। প্রতি ১ হাজারে নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ মাত্র ৬ টাকা। যা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর বেলায় এতো কমে পারা যায় না।
আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পোস্টঃ
- How to open bkash account 2023 – ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
- Bkash Cash Out Charge 2023 – বিকাশে ক্যাশ আউট চার্জ।
- Bkash merchant account 2023 – বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
- বিকাশ অফিসের নাম্বার ও ঠিকানা সব এক সাথে
- bKash Agent Registration 2023 – বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
- সহজে বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম 2023। বিকাশ ব্যালেন্স চেক
পরিশেষে
আজকের আয়োজন আমরা নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম। Nagad merchant account opening সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করা যায় এই আর্টিকেলটি পড়ে কিভাবে খুব সহজে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলক যায় তার ধারণা পেয়েছেন।
এছাড়াও নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা- অসুবিধা, মার্চেন্ট একাউন্ট কি, মার্চেন্ট একাউন্টের ক্যাশ আউট চার্জ কত, মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে তা জানতে পেরেছি। এরপরও যদি নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট সম্পর্কে কোনো প্রশ্নো থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
FAQ- প্রশ্নোত্তর
নগদ কত সালে তাদের যাত্রা শুর করে?
উত্তরঃ ২০০৯
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?
উত্তরঃ নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট হলো ব্যবসায়িকদের জন্য একটি ডিজিটাল লেনদেন সেবা।
বাংলাদেশের সব থেকে কম ক্যাশ আউট চার্জ কাটে নিচের কোনটি?
উত্তরঃ নগদ
নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ কত?
উত্তরঃ প্রতি ১ হাজারে মাত্র ৬ টাকা।