মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা (সেরা ৭টি আইডিয়া )

কে না চায় স্বাবলম্বী হতে, নিজে অর্থ আয় করতে? হোক সে একজন পুরুষ কিংবা মহিলা, সবাই চায় নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য একজন অর্থনৈতিক সাপোর্টার হতে।

মেয়েদের কথা মাথায় রেখেই আমরা আজকের এই আর্টিকেলে এমন কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানাবো। হতে পারে আপনি একজন গৃহিণী বা শিক্ষার্থী, নিচের ব্যবসার আইডিয়া গুলো থেকে কোনো একটা বেছে নিলে আপনিও হয়ে উঠতে পারবেন স্বাবলম্বী একজন মানুষ।।

মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা
মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা

মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা

২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী অর্থনৈতিক দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১ তম। আর এই পরিস্থিতির ক্রমাগত উন্নতি হয়েই চলেছে। ক্ষুদ্র, মাঝারি, কুটির শিল্প সহ অনেক ধরনের ব্যবসা এই অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিশীলতাকে বেগবান রেখেছে।

তাদের মধ্যে নারীদের ভূমিকা কম নয়। পুরুষদের মতো বাংলাদেরশের নারীরাও বিভিন্ন সেক্টরে ভালোভাবে কাজ করে চলেছে। আর আপনি যদি সেই সকল নারীদের মধ্য থেকে একজন হতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটা পড়তে থাকুন।

মেয়েদের জন্য কোন চাকরি ভালো ?

আমরা চাকরি বলতে শুধু পরের চাকরিকে বুঝি কিন্তু নিজে ব্যবসা করলেও যে চাকরি হয় এই কথাও কিন্তু মানতে হবে তবে, নিজের ব্যবসার চাকরিতে আনন্দই আলাদা। নিচে কিছু জনপ্রিয় ব্যবসার আইডিয়া দেয়া হলো আপনার পছন্দ অনুযায়ী শুরু করতে পারেন।

  • অনলাইন শিক্ষকতা
  • হোমমেড খাবার বিক্রি
  • হ্যান্ডক্রাফট বিক্রি
  • ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
  • বুটিক হাউজ ব্যবসা
  • ড্রপশিপিং ব্যবসা
  • সেলাই ব্যবসা

১. অনলাইন শিক্ষকতা

গেলো করোনা মহামারির পর থেকে অনলাইন শিক্ষকদের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। যখন সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার বন্ধ ছিলো তখন অনেকেই অনলাইনে জুম, ইউটিউব, ফেসবুক সহ কিছু প্ল্যাটফর্মে অনলাইন শিক্ষকতা শুরু করেছেন।।

মেয়েদের জন্য একটি ভালো ব্যবসার আইডিয়া হলো অনলাইন শিক্ষকতা করা। এই পেশায় বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমনঃ এখানে আপনি একই সাথে অনেক বেশি শিক্ষার্থী পড়াতে পারবেন, ইলেক্ট্রিসিটি বিল, চেয়াল টেবিল, রুম ভাড়া খরচ সহ অন্যান্য অনেক জিনিসের প্রয়োজন পড়ছে না।

অনেকেই ইউটিউবে নিজের চ্যানেল বানিয়ে সেখানে ভিডিও আপলোড করে থাকে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর প্রতিদিন উপকার হচ্ছে, ফ্রিতে ক্লাস করতে পারছে। আর ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ হয়ে গেলে ভিডিও আপলোডকারী সেখান থেকে অর্থ আয় করতে পারছে।

এভাবেই ইউটিউব ও ফেসবুকে ফ্রিতে ভিডিও আপলোড করেও আয় করা যায়। আবার নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে নিয়মিত পড়িয়েও তাদের কাছ থেকে মাসিক সম্মানী নেওয়া যায়।

জুম অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থী পড়াতে চাইলে স্থানীয়ভাবে আপনার বেশ সুনাম ও শিক্ষার্থী থাকা লাগবে। তাছাড়া আপনি অনলাইনে পড়ানোর জন্য শিক্ষার্থী পাবেন না। ভালো হয় যদি আপনি পেশায় একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা হয়ে থাকেন।

জুম অ্যাপের মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে শিক্ষার্থী পাবেন যদি আপনার নেটওয়ার্কিং ভালো থাকে তাহলে।

২. হোমমেড খাবার বিক্রি

যারা রান্না-বান্না পছন্দ করেন এবং গৃহিণী তাদের জন্য এই ব্যবসার আইডিয়াটা বেশ ভালো ও সুবিধাজনক। অনেক অফিসগামী মানুষ আছে যারা বাসা থেকে দুপুরের খাবার নিয়ে আসে না। বাইরে কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করে নেয়।

হোমমেড খাবারের একটা বড় কাস্টমার এই শ্রেণীর মানুষ। এছাড়া অনেকেই ফাস্টফুড সহ সকাল, বিকালের নাস্তা বাইরে খায়। তারাও আপনার ব্যবসার জন্য সম্ভাব্য কাস্টমার।

বাড়িতে সুস্বাদু খাবার বানিয়ে সেগুলো কোনো ডেলিভারি পার্টনারের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে পৌছে দিতে পারেন। বাংলাদেশে জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি কোম্পানি হলোঃ

১. ফুডপান্ডা

২. হাঙ্গ্রি নাকি

৩. পাঠাও ফুড

৪. ফুড পিওন

এই ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রথমে আপনার সামান্য কিছু জিনিসপত্র কেনা লাগবে। যেমনঃ খাবার ডেলিভারির জন্য ব্যাগ, কাটন, রান্না-বান্নার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সহ খাবার বানাতে যেসব উপাদান প্রয়োজন হয় সেগুলো। এরপর ফেসবুকে একটা বিজনেস পেজ খুলে ফেলুন এবং কাছের আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের জানান যে আপনি একটা এই ধরনের ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন।

নিকটস্থ অফিসগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখুন যে, কাদের দুপুরের খাবার প্রয়োজন হয়। এভাবে প্রাথমিকভাবে ব্যবসায়ের একটা প্রচারণা করে ফেলুন ফ্রিতে।

এরপর যখন খাবার তৈরি শুরু করবেন তাঁর আগে ফুড ডেলিভারি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। আপনার কাছে খাবারের কোনো অর্ডার আসলে আপনি ডেলিভারি কোম্পানিকে জানালে তারা আপনার খাবার কাস্টমারের কাছে পৌছে দেবে।

মাস শেষে অথবা দিন শেষে তারা নির্দিষ্ট শতাংশ কমিশন কেটে নেবে মোট টাকার উপরের। এভাবেই আপনার হোম মেড খাবার বিক্রির ব্যবসাটির সূচনা করতে পারেন। এটা বর্তমানে সেরা লাভজনক মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা  আইডিয়া।

৩.হ্যান্ডক্রাফট বিক্রি

আমরা এ কথা সকলেই মানতে রাজী যে, মেয়েরা কিছুটা বেশি রূচিশীল। হ্যান্ড ক্রাফট বানাতে মেয়েরা বেশ ভালো এগিয়ে আছে। আপনি যদি তাদেরই মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার শখটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। এই হ্যান্ড ক্রাফটগুলো ইতোমধ্যে বাইরের দেশে অনেক বেশি জনপ্রিয় হলেও আমাদের দেশে এটা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে।

এগুলো মূলত ঘর সাজানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। অনলাইনে প্রচুর বেচা বিক্রি হয় হাতের তৈরি জিনিসপত্র, এছাড়া স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করার সুযোগ পাবেন এগুলো।

মাটি, সিমেন্ট, হোয়াইট সিমেন্ট, প্লাস্টিক বোর্ড, কার্ডবোর্ড সহ অনেক জিনিস দিয়েই এই ধরনের হাতের জিনিস পাওয়া যায়। ইউটিউবে এই সংক্রান্ত অনেক ভিডিও আছে সেগুলো দেখে শিখে নিতে পারবেন। এটা হলো একটা সৃজনশীল কাজ।

আপনি যত বেশি চর্চা করবেন আপনার কাজের কোয়ালিটি তত বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত প্র্যাক্টিস করলে এবং বিভিন্ন ভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে অনেক ডিজাইন ও আইডিয়া মাথায় আসবে। এখান থেকে আরেকটি আয়ের উপায় আছে।

সেটা হলো হ্যান্ড ক্রাফট তৈরির সময় তা ভিডিও করে ফেসবুক ও ইউটিউবে আপলোড দেওয়া। ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজ মনিটাইজ করেও বাড়তি আয় করার সুযোগ পাবেন।

এটা মেয়েদের জন্য ভালো ব্যবসার আইডিয়া। তবে এই কাজ করতে গেলে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সেগুলো হলো

১. যেহেতু এই ধরনের পণ্যের অধিকাংশ কাস্টমার অনলাইনে পাবেন তাই দূর-দূরান্তে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করতে হতে পারে। এজন্য একটা ভালো কুরিয়ার কোম্পানির সাথে কাজ করতে হবে। আর এমন কোনো প্রোডাক্ট  বানানো যাবে না যেগুলো কুরিয়ার মাধ্যমে পাঠালে ভেঙে যেতে পারে বা নষ্ট হতে পারে।

২. তৈরিকৃত প্রোডাক্টগুলো খুব ভালোভাবে ছবি তুলতে হবে যেন কেউ এক দেখাতেই পছন্দ করতে পারে।

৩. পণ্যের সঠিক মান ও গুণাগুণ ধরে রাখতে হবে। তাহলে নিয়মিত এবং একই কাস্টমারকে বার বার পাবেন।

মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়াগুলোর মধ্যে এটাও চমৎকার একটা আইডিয়া হতে পারে

ফ্রিল্যান্সিং

৪.ফ্রিল্যান্সিং করে আয়

এই উপায়টা নিশ্চয়ই আগেও শুনে থাকবেন। তবুও আরেকবার মনে করিয়ে দিতে চাই যে, মেয়েদের জন্য অন্যতম ভালো ও নির্ভরযোগ্য আয়ের উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং করা। অনেক সেক্টর রয়েছে।

যেমনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মডারেটর সহ অনেক কাজ আছে। ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বলার তেমন কিছু নেই। তবে এই সেক্টরে টিকে থাকা এবং সফল হওয়া অন্যান্য সেক্টরের চেয়ে মুশকিল।

যথেষ্ট ধৈর্যশীল হতে হবে আপনাকে এবং কাজের প্রতি একাগ্রো হওয়া প্রয়োজন। যদি কোনো দক্ষতা না থাকে তাহলে অনলাইন বা অফলাইনে কোর্স করতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কোর্স শেষে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার সুযোগ দেয়।

জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ট্রেইনিং প্রতিষ্ঠান হলো Shikhbe Sobai, Jessore IT, Creative IT Institute, eShikhon.com। সুযোগ সুবিধা বুঝে আপনার যেটা পছন্দ হয় আপনি সেখানেই কোর্স করতে পারেন। উপরে উল্লিখিত সবগুলো প্রতিষ্ঠানই অনলাইন ট্রেইনিং দিয়ে থাকে, তাই বাড়িতে বসে শিখতে পারবেন।

প্রশিক্ষণ শেষে কাজ করার জন্য প্রস্তুত হলে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া দেশীয় অনেক ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন ফেসবুক, লিংকডিন থেকে। জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হলো

Fiverr

Upwork

Frelancer.com

99 Designs

People Per Hour

Envato

৫. বুটিক হাউজ ব্যবসা

পোষাক হলো মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম। আর সেই খাতে একটু ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে বুটিক শিল্প। বর্তমান তরুণ-তরুণীদের কাছে বুটিক করা পোশাকগুলো অনেক বেশি জনপ্রিয়। এর রয়েছে বিশাল বাজার সম্ভাবনা।

বিভিন্ন উতসব-অনুষ্ঠানে মানুষ পোশাক কিনে থাকেন এবং প্রায় সবারই চাহিদা থাকে বুটিকের প্রতি। কারণ, এগুলো দামে সাশ্রয়ী এবং ডিজাইন ও মানে ভালো। আপনি চাইলে অল্প পুঁজি দিয়ে একটা বুটিক হাউজের ব্যবসায় শুরু করতে পারেন।

দোকান নিতে পারেন অথবা নিজ বাড়িতেই সাজিয়ে রেখে তা অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। মেয়েদের জন্য লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া হলো বুটিক হাউজের ব্যবসা।

প্রায় সব ধরনের কাপড়ে বুটিক করা গেলেও বিশেষ করে সুতি, খাদি, সিল্ক প্রভৃতি কাপড়ের পোশাকে বুটিকের কাজ করা হয়। বুটিকের কাজ শুরু করতে গেলে আপনার প্রয়োজন হবে সেলাই মেশিন, কাঠের ডাইস রঙ, রঙিন সুতা, সুই।

এগুলো প্রতিটি জেলা শহরের বড় বড় দোকান গুলোতে পাওয়া যায়। তবে আপনি যদি ঢাকার ভেতরে বসবাস করেন তাহলে ঢাকার চকবাজার, গাউছিয়া, নিউ মার্কেট হলো সবচেয়ে ভালো জায়গা বুটিকের প্রয়জোনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য।

আর এই কাজ করতে গেলে আপনার যে জিনিসটি অবশ্যই প্রয়োজন হবে সেটা হলো সঠিক প্রশিক্ষণ। ইউটিউব, গুগল, ফেসবুক সহ অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও, লেখা, রিসোর্স পেলেও তা কার্যকরী না।

সঠিক প্রশিক্ষণের জন্য আপনাকে কোনো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া লাগবে। বুটিক প্রশিক্ষণ নিতে পারেন যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেগুলো হলোঃ

  • বাংলাদেশ মহিলা সমিতি
  • বিসিক
  • যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
  • ঘরকন্যা প্রভৃতি

৬. ড্রপশিপিং ব্যবসা

আমাদের দেশে ইতোমধ্যে ড্রপশিপিং ব্যবসা অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু আপনি জানেন, ড্রপশিপিং ব্যবসা কি? ধরুন, আপনার একটা অনলাইন শপ আছে কিন্তু সেখানে কোনো পণ্য স্টক করা নেই। তাহলে আপনি কাস্টমার কিভাবে পাবেন আর কাস্টমার পেলেও কিভাবে কাস্টমারকে প্রোডাক্ট দেবেন?

অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিজের শপের মাধ্যমে বিক্রি করাকে ড্রপশিপিং বলে। আপনার একটা অনলাইন শপ থাকবে এবং সেখানে পণ্যের বিজ্ঞাপন দেবেন। এই পণ্যগুলো হবে অন্য একটা কোম্পানির।

আপনি যখন কোনো পণ্যের অর্ডার পাবেন তখন তা উক্ত কোম্পানির কাছে সাবমিট করবেন। কোম্পানি নিজ তত্বাবধানে কাস্টমারের কাছে পণ্য পৌছে দেবে। আপনি কোম্পানির কাছ থেকে যে পরিমাণ টাকায় প্রোডাক্ট নিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন সেটা দিয়ে বাকি যে টাকাটা থাকবে সেটা আপনার মুনাফা।

এই ব্যবসা নারীদের জন্য বেশ সুবিধাজনক। কারণ, এখানে অগ্রিম বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। লোকসানের ঝুকি নেই। বাড়িতে বসে মোবাইল বা ল্যাপটপের মাধ্যমে একটা ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখান থেকে কাস্টমার ম্যানেজ করতে পারবেন। আবার চাইলে কোনো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে অনলাইন শপ তৈরি করে নিতে পারেন।

৭. সেলাই ব্যবসা

মূলত নারীরাই সেলাই এর জন্য প্রখ্যাত। আমাদের দেশের গার্মেন্টস গুলোতে নারীরাই সেলাইয়ের কাজ করে থাকে। সেলাই এর ব্যবসা করতে তেমন কোনো ইনভেস্টের প্রয়োজন হয় না।

শুধুমাত্র একটি ভালো মানের সেলাই মেশিন, বাহারি রঙের সুতা, ফিতা সহ খুঁটিনাটি দরকারী জিনিস লাগে। আর এই কাজ শুরু করার জন্য আপনাকে বাইরে যেতে হচ্ছে না, বাজারে কোনো দোকান নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং নিজ বাড়িতেই শুরু করতে পারেন।

পাড়া প্রতিবেশীদের জামা-কাপড় বানানোর অর্ডারগুলো আপনিই নিতে পারেন। এছাড়া অনেক পরিচিত জনের কাজ পাবেন। যেহেতু বাড়িতেই এই ব্যবসা করবেন তাই বিদ্যুৎ বিল, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

একটা পোশাক বানাতে বাজারে যে পরিমাণ মুজুরি নেয় আপনি তাঁর চেয়েও কম মুজিরিতে সেটা বানিয়ে দিতে পারবেন। তাই অনেকেই বাড়িতে বানাতে দেয়।

প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনি যদি সেলাই কাজে দক্ষ ও পারদর্শী না হয়ে থাকেন তাহলে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। অনেক সংস্থা নারীদেরকে এই ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে বিনামূল্যে। তাঁর মধ্যে অন্যতম হলো উপজেলা নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব উন্নয়ন ইত্যাদি। সেলাই ব্যবসা মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা হিসেবে অনেক জনপ্রিয়।

শেষ কথা

নারীরা আজকের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখছে। অনেক পরিবারে একমাত্র মেয়েরাই পরিবারের হাল ধরেছে। শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই ঐ সকল নারী উদ্যোক্তাদের প্রতি যারা বিভিন্নভাবে পরিবারকে সহায়তা করছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সাহায্য করছে।

আপনি হতে পারেন এমন একজন নারী উদ্যোক্তা। উপরের যে মেয়েদের ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়াগুলো বলেছি সেগুলোর বাজার সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ সফলতা বেশ ভালো। আপনার সাধ্য ও সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী যেকোনোটা বেছে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। সফল হতে হলে অবশ্যই সৎ থাকতে হবে এবং পরিশ্রমী হতে হবে।।

Leave a Reply