You dont have javascript enabled! Please enable it! মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

শীত কিংবা বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টিতে গরম গরম ধোঁয়া তোলা খিচুড়ি! আহ কতই না মজা লাগে আর সাথে যদি থাকে নানান রকম ভর্তা বা  ডিম ভাজা তাহলেতো কথাই নেই। জিভে জল চলে আসে তাই না ?  তাই আজ আপনাদের সামনে নিয়ে আসলাম মজাদার খিচুড়ি রান্নার রেসিপি khichuri ranna recipe ! আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে

সত্যি কথা বলতে খিচুড়ি রান্না করতে যে খুব একটা কঠিন তা কিন্তু নয়। চাল, ডাল, তেল, মসলা এসকল কিছুর একসাথে মিশিয়ে রান্না করলেই খিচুড়ি হয়ে যাবে, তবুও লিখার খাতিরে একটু হিসাব নিকাশ না দিলেই নয়। আজকে দুই টা পদ্দ্বতিতে খিচুড়ি রান্না করা দেখাবো একটা হলো প্রফেশনাল ভাবে মানে সব কিছু মেপে হিসাব নিকেশ করে সব কিছু দিতে হবে আরেকটা হলো মাঝে মাঝে আমি যেভাবে রান্না করি মানে হাতের সামনে যা থাকে মানে রান্না করার মতো তাই দিয়েই খিচুড়ি রান্না করি যাকে বলে মনমতলবী খিচুড়ি। তবে মজা কিন্তু সেই রকমের হয়।

তাহলে চলুন শুরু করা যাক

প্রথমেই দেখি প্রফেশনাল  ভাবে খিচুড়ি রান্নার কৌশল

উপকরণ যা যা লাগবে

১। চাল  ২কাপ
২। মুসুর ডাল,হাফ কাপ
৩। মুগ ডাল হাফ কাপ
৪। পেয়াজ কুচি হাফ কাপ
৫। কয়েকটা আস্ত কাঁচামরিচ
৬। হলুদের গুড়া ১চা চামচ
৭। মরিচের গুঁড়া ১চা চামচ
৮। আস্ত জিরা ১ চা চামচ
৯। তেজপাতা ২-৩ টা
১০। দারুচিনি ২ টুকরো
১১। এলাচ ৩টা
১২। আদা পেস্ট দেড় টেবিল চামচ
১৩। রসুন পেস্ট ১টেবিল চামচ
১৪। ধনিয়া পাতা পরিমাণ মতো
১৫। লবণ পরিমাণ মতো
১৬। তেল অথবা ঘি পরিমান মতো

প্রথমে ২কাপ চাল, হাফ কাপ মুসুর ডাল, হাফ কাপ মুগের ডাল নিতে হবে। এবার মুগের ডাল  হালকা আঁচে টেলে বা ভেজে নিতে হবে , খেয়াল রাখতে হবে টালার সময় যেন পুরে না যায়।  চাল আর দুই রকমের ডাল মিশিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে পানি ঝডিয়ে নিতে হবে। অনেকে আবার শুধু মসুর ডালের খিচুড়ি রেসিপি চান আমি মনে করি মসুর ডালের সাথে মুগ ডাল হলে কিন্তু মজাটা একটু বেশি হয়।

খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

খিচুড়ি রান্নার রেসিপি

এবার চুলায় হাড়ি বসিয়ে হালকা গরম করে তাতে পরিমান মতো ঘি ও তেল দিতে হবে, হালকা গরম তেলে তেজপাতা দারুচিনি এলাচ ও আস্ত জিরা দিয়ে একটু গরম হয়ে ফুটকুরি উঠলে দিয়ে দিতে হবে পেঁয়াজ কুচি।পেঁয়াজ হালকা বাদামি কালার হবে তখন সামান্য একটু পানি দিয়ে দিতে হবে।কারণ আমারা যে মসলা ব্যবহার করব সেটা যেন পুরে না যায়।

এবার এক এক করে সব মসলা দিয়ে দিতে হবে, হলুদ মরিচের গুঁড়া আদা রসুনের পেস্ট দিয়ে মসলা টাকে ভালো করে নেড়ে কষিয়ে নিতে হবে। যখন মসলার পানি শুকিয়ে তেল উপরে উঠে আসবে তখন, আগে থেকে ধুয়ে রাখা চাল দিয়ে দিতে হবে। এবার চাল ডাল ভালো করে নেড়ে দিতে হবে, যেন মসলাটা মিশে যায়।

এবার স্বাদ মতো লবণ দিতে হবে এবার চালটাকে মিডয়াম আঁচে ভেজে নিতে হবে, চাল যত ভালো ভাজা হবে খিচুড়ি ততই ঝড়ঝড়া হবে। এবং খেতে ও স্বাদ বেড়ে যাবে, কখনোই হাই বা উচ্চ তাপে ভাজা যাবে না।তাহলে পুরেযাবে আর চালটাও ভালো ভাবে ভাজা হবে না। চাল ভাজা বা কষানো হয়ে গেছে তা বোঝার উপায় হল সুন্দর একটা ঘ্রান আসবে আর চালটা সাদা দেখাবে এছাড়াও যখন নাড়বেন তখন শনশন একটা শব্দ শুনতে পারবেন।

এবার পরিমাণমতো পানি দিতে হবে যেহেতু চাল আর ডাল মিলে ৩ কাপ হয়েছে সেহেতু ৬ কাপ পানি দিতে হবে। যে কাপ দিয়ে চাল ডাল মাপা হয়েছে সেম সেই কাপ দিয়ে পানি মেপে দিতে হবে| যদি একটু বেশি ঝড় ঝরা খেতে চান তাহলে পানি একটু কম দিতে পারেন।

পানিটা গরম পানি হতে হবে অনেকে ওই পানিতে  জিরা ধনিয়া গুড়া দিয়ে থাকেন  চাইলে আপনিও দিতে পারেন। পানি দেয়ার একটু পরেই আরো একবার লবন চেক করে নেবেন কারণ পানি শুকিয়ে যাবার পর লবন দিলে ভালো ভালোভাবে মিশবে না।

এটা খুবই সিম্পল একটা খিচুড়ি কিন্তু খেতে খুবই অসাধারণ ও টেস্টি হবে। যখন পানি কমে আসবে একটু একটু পানি দেখা যাবে| তখন চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবেন| খিচুড়ি হয়ে এলে আস্ত কয়েকটা কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে হালকা নেড়ে দিতে হবে।

ধনিয়া পাতা দিলে খিচুড়ি ঘ্রান ভালো আসে, এবং খেতেও  ভালো লাগে। এবার আর একটু ঢেকে রাখলেই হয়ে যাবে খিচুড়ি।  খিচুড়ি বেশি নাড়াচাড়া করলে গলে যাবে, তাই সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবার হয়ে গেলে গরম গরম পরিবেশন করুন আর মজা দেখুন। সাথে যদি থাকে রসুনের আচার তাহলেত আরো মজা হবে।  রান্না শিখে গেলে দাওয়াত দিতে ভুলবেন না।

তাহলে আশা করি খিচুড়ি রান্নার রেসিপি khichuri ranna recipe  বুঝতে পেরেছেন।  শিখেছেন কিনা একবার ট্রাই করে দেখুন।

সবজি খিচুড়ি

সবজি খিচুড়ি

এখন দেখবো আমি যেভাবে রান্না করি  সেই ভাবে খিচুড়ি রান্নার রেসিপি khichuri ranna recipe

আমি খিচুড়ি রান্না করি রাইস কুকারে আপনারা যে কোনো ভাবে করতে পারেন। তাহলে চলুন দেখে নেই আমার স্টাইলে খিচুড়ি রান্নার রেসিপি।

প্রথমেই আমি রাইস কুকারের হাড়িতে ২ কাপ চাল আর এক কাপ ডাল নিয়ে ভালো করে ধুয়ে পাশেই রেখে দেই। যে কোন ডাল দিলেই হয় মানে খেসারি অথবা মুসুর ডাল একটা হলেই হয়।

তারপর একে একে নীচে দেয়া সব কিছু ঐ হাড়িতে দিয়ে দেই

# মাঝারি সাইজের দুটো পিয়াজ কুচি
# ৪/৫ টা কাঁচা মরিচ কেটে দেই
# মিক্স মসলা পরিমান মতো
# সাথে অল্প পরিমান হলুদ গুড়ো ও মরিচ গুড়ো
# দুই তিন টা এলাচ
# দুই তিন টা লবঙ্গ
# একটা তেজ পাতা
# আদা এবং রসুন পেস্ট পরিমান মতো
# তেল পরিমান মতো
# লবণ পরিমান মতো
# কয়েকটা সরিষার দানা ও কালোজিরা দিয়ে দেই স্বাদ বারাতে

বিঃ দ্রঃ এর সাথে কিছু সবজিও ছোট ছোট করে কেটে দিতে পারেন। মজাও লাগবে আবার পুষ্টিগুণও বেড়ে যাবে। 

উপরের দেয়া সবগুল উপকরন একসাথে ভালো করে মিশিয়ে ৫-১০ মিনিট ফ্রিজ এর নরমালে রেখে দেই । তারপর যে পরিমান চাল নিয়ে ঠিক তার দিগুন পানি দিয়ে কুকারে বসিয়ে দেই। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর একবার একটু নেরে দেই সেই সাথে লবণটাও চেক করে নেই ।

ব্যাস হয়ে গেলো ৩০ থেকে ৩৫ মিনিটের মতো সময় লাগে । কুকারে খিচুড়ি হয়ে গেলে লাল বাতি নিভে গিয়ে হলুদ বাতি জ্বলে উঠে তখন নামিয়ে নিয়ে গরম গরম পরিবেশন করি। সাথে রাখি ডিম ভাজা অথবা আলু বা বেগুনের ভর্তা। আহ কি যে মজা না খেলে বুঝবেন না।

তাহলে একবার ট্রাই করে দেখুন সত্যি ভালো লাগবে আমার এই খিচুড়ি রান্নার রেসিপি।

Leave a Reply